পাকিস্তানের গোয়াদার শহরে মুখোমুখি অবস্থায় সামরিক বাহিনী এবং বেলুচ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গোয়াদারে চীনের তৈরি গুরুত্বপূর্ণ একটি গভীর সমুদ্রবন্দর রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে।
জাতিগত-জাতীয়তাবাদী অধিকার আন্দোলন বেলুচ ঐক্য কমিটির (বিওয়াইসি) নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষ শনিবার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহরটিতে তথাকথিত বেলুচ জাতীয় সমাবেশে যোগ দেয়ার জন্য পৌঁছেছে। তারা গুম হওয়া মানুষদের ফিরিয়ে আনা এবং সম্পদ সমৃদ্ধ কিন্তু দরিদ্র বেলুচিস্তান প্রদেশে চীনের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোতে অর্থবহভাবে জড়িত থাকার দাবি করছে।
সোমবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানায়, বেলুচ রাজি মুচির (বেলুচ ন্যাশনাল গ্যাদারিং) ছদ্মবেশে একদল সহিংস জনতা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালালে তাদের এক সদস্য নিহত হন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গোয়াদারের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “সহিংস বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বিনা উস্কানিতে হামলায়” আরও ১৬ জন কর্মী আহত হয়েছেন। এতে “দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা হবে” বলে অঙ্গিকার করা হয়।
বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার
গণমাধ্যমে দেয়া এক ভিডিও বিবৃতিতে বিওয়াইসি নেতা মাহরাং বেলুচ বলেন, প্রতিবাদ আন্দোলনকে লাইনচ্যুত করার চেষ্টায় কর্তৃপক্ষ গত তিন দিনে প্রায় এক হাজার বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার করেছে।
রবিবার বালুচ এবং অন্যান্য কর্মীরা গোয়াদারে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়া সত্ত্বেও তারা সেখানে জড়ো হয়েছিল। ঘটনাটি মূল ধারার গণমাধ্যমে কার্যত কোনো কাভারেজ পায়নি।
বিওয়াইসি পরে ঘোষণা করে, বিক্ষোভটি একটি অবস্থান ধর্মঘটে রূপান্তরিত হবে। তারা প্রতিজ্ঞা করে, যতক্ষণ না সমস্ত আটক বিক্ষোভকারীদের মুক্তি দেয়া হচ্ছে, এবং যাদের বিক্ষোভে যোগ দিতে বাধা দেয়া হয়েছে তাদের গোয়াদারে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে, ততক্ষণ তারা সেখানে অবস্থান করবে।
শত কোটি ডলারে নির্মিত চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের প্রধান প্রকল্প হচ্ছে ২০১৬ সালে উদ্বোধন করা গোয়াদর সমুদ্রবন্দর। সিপেক নামে পরিচিত এই প্রকল্পটি বেইজিং-এর বৈশ্বিক বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের কেন্দ্রবিন্দু।
বিওয়াইসি জানায়, কর্তৃপক্ষ গোয়াদারে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়ন অব্যাহত রাখায় কমপক্ষে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।