ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমিতে হাজার হাজার শোকার্ত মানুষ এক রকেট হামলায় নিহত ১২ শিশু ও কিশোরের জানাজায় অংশগ্রহণ করে । ইসরায়েল এই হামলার জন্য লেবাননের হিজবুল্লাহ্র বিরুদ্ধে দ্রুত প্রতিশোধ নেবার অঙ্গীকার করেছে।
হিজবুল্লাহ মাজদাল শামসে হামলার দায় অস্বীকার করেছে। গত বছর ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় নতুন করে যুদ্ধের সূত্রপাত হবার পর থেকে ক্রমাগত এই অঞ্চলে যূদ্ধের স্ফুলিঙ্গ বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে তা বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকির দিকে মোড় নিচ্ছে।
ইসরায়েলি বিমানগুলো রাতে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণ চালায়। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে ফিরে আসার পর রবিবার বিকেলে দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর আরও জোরালো প্রতিক্রিয়া আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে সিরিয়ার কাছ থেকে গোলান মালভূমি দখল করে, যেখানে মাজদাল শামসের দ্রুজ গ্রাম অবস্থিত। নিহত কিশোরদের পরিবারগুলো জানাজার জন্য গ্রামে সমবেত হয়েছিল।
ইসরায়েল দখলকৃত অঞ্চলকে নিজ দেশে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে, কিন্তু বেশিরভাগ দেশ সেটার স্বীকৃতি দেয় না।
মাজদাল শামসের স্থানীয় কাউন্সিলের প্রধান দোলান আবু সালেহ ইসরায়েলি টেলিভিশনে প্রচারিত এক মন্তব্যে বলেন, "আমরা একটি কঠিন সময়ে রয়েছি।এটি মাজদাল শামসের জন্য একটি অন্ধকার দিন।"
হিজবুল্লাহর অস্বীকৃতি
হিজবুল্লাহ প্রথমে গোলান মরুভূমির ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটিতে রকেট নিক্ষেপের ঘোষণা দিলেও, এই ঘটনার সাথে তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছে।
হিজবুল্লাহ বলেছে তাদের "এই ঘটনার সাথে বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই," এবং ঘটনা সম্পর্কে "সকল মিথ্যা অভিযোগ" তারা "অস্বীকার করছে।"
এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র সাংবাদিকদের, ফরেনসিক্স পরীক্ষায় রকেটটি ইরানের তৈরি ফালাক-১ ছিল বলে জানিয়েছেন। শনিবার হিজবুল্লাহ ইসরায়েলি সামরিক সদরদপ্তর লক্ষ্য করে ফালাক-১ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘোষণা দেয়।
লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বো হাবিব বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তার সরকার যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে ইসরাইলকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বো হাবিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জবাবে লেবানন সরকারকে হিজবুল্লাহকে সংযম প্রদর্শনের বার্তা দিতে বলেছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানির, লেবাননে নতুন কোনো দুঃসাহসিক অভিযান চালানোর বিষয়ে ইসরাইলকে সতর্ক করেন। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেছেন, “আমরা শত্রুর ওপর কঠোর আঘাত হানব।”
যুক্তরাষ্ট্র সরকার লেবানন আর ইসরায়েলের সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করছে। তারা এই হামলার নিন্দা জানালেও সরাসরি হিজবুল্লাহকে ঘটনার জন্য দায়ী করেনি।