অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাংলাদেশের ছাত্র বিক্ষোভের জেরে আরও তিনজনের প্রাণহানি


শুক্রবার সরকারি চাকরি কোটা নিয়ে নতুন করে ঢাকায় বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার সরকারি চাকরি কোটা নিয়ে নতুন করে ঢাকায় বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার সরকারি চাকরি কোটা নিয়ে নতুন করে বিক্ষোভে বাংলাদেশে তিনজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে প্রচারমাধ্যম। টেলি যোগাযোগ ব্যাপকভাবে ব্যাহত ছিলো এবং টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো।

বিতর্কিত কোটার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ, অস্থিরতা প্রশমিত করার চেষ্টায় কর্তৃপক্ষ কিছু মোবাইল টেলিফোন পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের এই মোবাইল টেলিফোন পরিষেবা বন্ধের ঘটনা শুক্রবার বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সাইবার বিভ্রাটের সাথে সম্পর্কিত নয়।

সরকার মোবাইল টেলিফোন পরিষেবা বন্ধের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। অনির্দিষ্টকালের জন্য সমস্ত জনসভা এবং মিছিল নিষিদ্ধ করার সরকারী আদেশ সত্ত্বেও, নতুন বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। এক সপ্তাহের সহিংসতায় অন্তত দুই ডজন মানুষ মারা গেছে।

বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নির্বাসিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের একটি পোস্টে বলেছেন, “আমি সকল নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানাই এই কোমলমতি ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য, তাদের সবকিছু প্রদান করুন, সমর্থন করুন এবং এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যান।”

তিনি আরও বলেন, আন্দোলনে বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মী, ছাত্রছাত্রীকে "রাজনৈতিক রঙ" দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে রয়টার্স গ্রেপ্তার সম্পর্কে এই বিবৃতি যাচাই করতে পারেনি।

বাংলা পত্রিকা প্রথম আলোর ইংরেজি ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, শুক্রবার বিক্ষোভকারীরা রাস্তা অবরোধ এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের দিকে ইট ছোঁড়ার কারণে সারাদেশে ট্রেন চলাচল স্থগিত করা হয়েছে।

পুলিশ কিছু এলাকায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে।

টেলিযোগাযোগ ব্যাহত, ওয়েবসাইট হ্যাক

শুক্রবার বাংলাদেশের ইন্টারনেট এবং বিদেশের সাথে টেলিফোন যোগাযোগ বন্ধ ছিল।

বেশ কয়েকটি পত্রিকার ওয়েবসাইট আপডেট হয়নি এবং সোশ্যাল মিডিয়াতেও নিষ্ক্রিয় ছিল।

রয়টার্সের একজন সাংবাদিক বলেছেন, কয়েকটা ভয়েস কল করা গেছে, কিন্তু মোবাইল ডাটা বা ব্রডব্যান্ড ছিল না। এমনকি টেক্সট মেসেজও প্রেরণ করা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, সংবাদ টেলিভিশন চ্যানেল ও রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী বিটিভি বন্ধ হয়ে যায়।

তবে বিনোদনের চ্যানেলগুলো তাদের নিয়মিত অনুষ্ঠান প্রচার করছে।

কিছু নিউজ চ্যানেল প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখিয়ে একটি বার্তা প্রদর্শন করেছে এবং শীঘ্রই প্রোগ্রামিং পুনরায় শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

তবে বিমান চলাচল ওয়েবসাইট Flightradar24 থেকে দেখা গেছে, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পুলিশের ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। হ্যাকার গ্রুপ নিজেকে "R3SISTANC3" বলে পরিচয় দিচ্ছে৷

"অপারেশন হান্টডাউন, স্টপ কিলিং স্টুডেন্টস," এরকম বার্তাগুলি সাইটগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। লাল রঙের অক্ষরে লেখা ছিলো: "এটি আর প্রতিবাদ নয়, এখন যুদ্ধ।"

পেইজে আরেকটি বার্তায় লেখা হয়েছে, "আমাদের নীরব করতে এবং তাদের ক্রিয়াকলাপ লুকানোর জন্য সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে।”

বৃহস্পতিবার, সরকার বলেছিল যে তারা বিক্ষোভকারীদের সাথে আলোচনা করতে ইচ্ছুক, কিন্তু বিক্ষোভকারীরা প্রত্যাখ্যান করে বলেছিল, "আলোচনা এবং গুলি চালানো একসাথে যায় না।"

XS
SM
MD
LG