কূটনীতিকদের নিয়ে বুধবার ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শনে যাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সেগুনবাগিচায় নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ হাছান মাহমুদ বলেছেন বুধবার কূটনীতিকদের নিয়ে তিনি ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শনে যাবেন।
রবিবার (২১ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিদেশী কূটনীতিকদের দেশের পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফ করে যেখানে ৪০টি মিশনের প্রধান ও ৮৫টি দেশের কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেই বৈঠকে তিনি কূটনীতিকদের ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন এবং সেই মোতাবেক বুধবার তাদের নিয়ে তিনি ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনে যাবেন।
ঐ বৈঠকে তিনি দাবী করেন, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে স্বাধীনতা-বিরোধী, রাষ্ট্র-বিরোধী এবং বিভিন্ন দুষ্কৃতিকারী মহল ঢুকে পড়ে সরকারি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনিষ্ট করছে।
রবিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ হাছান মাহমুদ কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করেন যে চলমান পরিস্থিতি দ্রুতই স্বভাবিক হয়ে যাবে। তিনি সেদিন চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কূটনীতিকদের উদ্বেগের বিষয়টি সরকারের জ্ঞাত আছে বলে তাদের জানান।
একই সঙ্গে তিনি ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কূটনীতিকদের নিরাপত্তা বিধানের বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর বলেও উল্লেখ করেন।
মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ইন্টারনেট না থাকার সুযোগ নিয়ে গুজব ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে যা "অনভিপ্রেত।" বিদেশি মিশনগুলোকে তারা সচেতন করেছেন বলে জানান তিনি।
আন্দোলনে মৃতের সংখ্যা নিয়ে তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে মৃতের সংখ্যা অনেক গুজব ছড়ানো হয়েছে। এনিয়ে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে তিনি জানান।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "দূতাবাসের কর্মকর্তারা যে ছুটি নিচ্ছেন সেখানে আমাদের জানানোর কিছু নাই। তবে দেশে এমন কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি যে কূটনীতিকদের দেশ ছেড়ে যেতে হবে।"
সাংবাদিকের আরেক প্রশ্নের জবাবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর "অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ" সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে বলে বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রবিবার (২১ জুলাই) বলেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে কেউ তাঁর রাজ্যে আসলে তিনি আশ্রয় দেবেন। কলকাতায় তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসের এক সভায় তাঁর বক্তব্য উদ্ধৃত করে একাধিক ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বিষয়টি জানিয়েছে।
“আমি সবাইকে উস্কানি এড়ানোর জন্য বাংলাদেশ নিয়ে কোন মন্তব্য না করার আহ্বান জানাচ্ছি। যারা রক্তপাতে ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের জন্য আমাদের সমবেদনা এবং সহানুভূতি রয়েছে,” পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য মন্ত্রী বলেন।
ভিডিও: লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে বিক্ষোভ সমাবেশ
সোমবার (২২ জুলাই) লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে বাংলাদেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে প্রবাসীরা। কয়েক হাজার বাংলাদেশি সেই বিক্ষোভে যোগ দেন। পরে তারা মিছিল করে পার্লামেন্ট ভবন পর্যন্ত যান।
ভিডিওঃ সোমবার হেলিকপ্টারে ঢাকা পরিদর্শনে বের হন সেনাবাহিনী প্রধান
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান সোমবার (২২ জুলাই) হেলিকপ্টারে ঢাকা পরিদর্শনে বের হন। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "জনগণের অনেক সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে। সেগুলোকে রক্ষা করার জন্য এবং জনগণের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য আমাদেরকে (সেনাবাহিনীকে) নিয়োগ দেয়া হয়েছে।... জনগণের সম্পত্তির যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা আসলে অবর্নণীয়।"
তিনি সোমবার আরও বলেছেন দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি “নিয়ন্ত্রণের ভেতরে” নিয়ে আসা হয়েছে। গত কয়েকদিন ব্যাপক সহিংসতায় ১০০’র বেশি মানুষ মারা যাবার পর শুক্রবার রাতে সেনা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
সাক্ষাতকার শেখ হাসিনার সামনে চ্যালেঞ্জ: একটি বিশ্লেষণ
বাংলাদেশে কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে তা নজিরবিহীন। এতে শতাধিক লোক নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই তরুণ ও কিশোর, অনেকেই শিক্ষার্থী। যদিও সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এ সম্পর্কে এক নির্দেশনা দিয়েছে যেখানে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী কোটার অনুপাতে ব্যাপক সংস্কার আনার কথা বলা হয়েছে। সরকার এরই মধ্যে তার প্রতিফলনে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই কোটা আন্দোলন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য কতটা চ্যালেঞ্জ- এ নিয়ে ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেছেন ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ। আর ওয়াশিংটন থেকে তাঁর সাক্ষাতকারটি নেন ভয়েস অফ আমেরিকার আনিস আহমেদ।