মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টি কনভেনশনের দ্বিতীয় দিনের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল অভিবাসন। বক্তারা সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক ব্র্যান্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেন, যা ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা চালানোর সময় দলটির সমর্থকদের কাছে তাকে প্রিয় করে তুলতে সহায়তা করেছিল।
রিপাবলিকান পার্টির অন্যতম কৌশল হল সীমান্ত রাজনীতির সঙ্গে অপরাধের সংশ্লিষ্টতা তুলে ধরা, যার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাতে সহিংস অপরাধে নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হয়েছেন এমন পরিবারের সদস্যরা বক্তার তালিকায় স্থান পান। তাদের মধ্যে আছেন মেরিল্যান্ডের নারী র্যাচেল মোরিনের পরিবারের সদস্যরা।
কৌসুলিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, র্যাচেলকে এল সালভাদর থেকে পালিয়ে আসা একব্যক্তি ধর্ষণ ও হত্যা করেছিলেন। এই পরিবারের মর্মান্তিক পরিণতির গল্পটি ট্রাম্প প্রায়ই তার নির্বাচনী প্রচারণায় উল্লেখ করেন।
দীর্ঘদিন ধরে ট্রাম্পের বহুল আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে অভিবাসন স্থান করে নিয়েছে। তিনি মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্ত দিয়ে অসংখ্য অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীর নজিরবিহীন অনুপ্রবেশ নিয়ে বরাবরই সোচ্চার। সীমান্তে আশ্রয় প্রার্থনার প্রক্রিয়ার ওপর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্থগিতাদেশ জারি করার পর বিনা অনুমতিতে সীমান্ত পেরোবার হার দ্রুত এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে এসেছে।
সমাবেশ ও অন্যান্য নির্বাচনী অনুষ্ঠানে ট্রাম্প জঘন্য সব অপরাধ করেছেন এমন অভিবাসন প্রত্যাশীদের উদাহরণ টেনেছেন। তিনি ফেনটানিলের মতো মাদক পাচারের প্রকোপ বৃদ্ধির জন্য অভিবাসনকে দুষেছেন। তবে ফেডারেল ডাটায় দেখা গেছে সীমান্তে ফেনটানিল মাদকপাচারের সঙ্গে জড়িতদের অর্ধেকের বেশিই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকারে অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
ট্রাম্পের অভিবাসন-বিরোধী বক্তব্যগুলো অনেক সময় অসত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। যেমন, তিনি ভিত্তিহীনভাবে দাবি করেছেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য অভিবাসনপ্রত্যাশীরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছে।
রিপাবলিকান প্রতিনিধি ও হাউসের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা, লুইজিয়ানার স্টিভ স্ক্যালিসের মন্তব্যে ট্রাম্পের এই চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি বলেন, “(জো) বাইডেন ও (কামালা) হ্যারিস সীমান্ত খুলে দিয়েছেন। তারা চান অবৈধ (অভিবাসনপ্রত্যাশীরা) এসে ভোট দিক।”
মঙ্গলবার সিনেটের যেসব সদস্য বক্তব্য দেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রে অসংখ্য অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রবেশের জন্য শুধু বাইডেনকে নয়, সঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসকেও দায়ী করেছেন। প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে বাইডেন খারাপ করার পর থেকে গুজব রটেছে, বর্তমান প্রেসিডেন্টের বদলে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থিতা পেতে পারেন ভিপি কামালা। এরপর থেকেই রিপাবলিকানরা কামালার দিকেও সমালোচনার তীর ছুঁড়ছেন।