উত্তর ভারতে মঙ্গলবার (২ জুলাই) এক ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে হাজার হাজার মানুষ হুড়োহুড়ি করে বের হবার সময় ১০০ জনের বেশি পদদলিত হয়ে মারা গেছেন এবং অনেকে আহত হয়েছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, মৃতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু আছে।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হিন্দু ব্যক্তিত্ব ভোলে বাবার একটি অনুষ্ঠানের পর অংশগ্রহণকারীরা অস্থায়ী তাঁবু থেকে তাড়াহুড়া করে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। ঘটনার পর ভিডিওতে দেখা গেছে, কাঠামোটি ধসে পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। মৃতদের জন্য নারীদের শোকের মাতম করতে দেখা যায়।
কী কারণে ঘটনাস্থলে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল তা তাৎক্ষনিকভাবে পরিষ্কার হয় নি। স্থানীয় গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, তাঁবুর ভেতরে প্রচণ্ড গরম এবং মানুষের দম বন্ধ হয়ে আসা একটি কারণ হতে পারে।
উত্তর প্রদেশ পুলিশের মহাপরিচালক প্রশান্ত কুমার বলেন অন্ততপক্ষে ১১৬ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগি নারী ও শিশু।
আরও ৮০ জনের বেশি আহত হন এবং তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, সিনিয়র পুলিশ অফিসার শালাভ মাথুর বলেন।
ভারতীয় ধর্মীয় উৎসবগুলোতে পদদলিত হয়ে হতাহতের ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে। দুর্বল অবকাঠামো এবং খুব অল্প সুরক্ষা ব্যবস্থা সম্পন্ন অল্প জায়গাজুড়ে হওয়া উতসবগুলোতে প্রচুর মানুষের ভীড় হয়।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত ভিড়
পুলিশ কর্মকর্তা রাজেশ সিং বলেন, উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষ্ণৌ থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে হাথরাস জেলার একটি গ্রামে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার পেছনে অতিরিক্ত ভিড় একটি কারণ হয়ে থাকতে পারে।
প্রাথমিক খবরে জানা গেছে, এই অনুষ্ঠানে ১৫ হাজারের বেশি মানুষ জড়ো হয়েছিল। অনুষ্ঠানে ৫০০০ মানুষের আতিথেয়তার অনুমতি ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী শকুন্তলা দেবী সংবাস সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে বলেন, “একের উপর এক মানুষ পরে যেতে লাগলো। যারা চাপা পড়েছে তারা মারা গেছে। সেখানকার লোকজন তাদের টেনে বের করে আনে।”
সরকারি কর্মকর্তা মাতাদিন সরোজ জানান, ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়িতে করে মরদেহগুলো হাসপাতাল ও মর্গে নিয়ে আসা হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা আশিস কুমার বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, জেলার অন্তত ৬০ জনের লাশ মর্গে পৌঁছেছে।
মেডিকেল অফিসার উমেশ ত্রিপাঠি জানান, ১৫০ জনের বেশি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনাটিকে “অত্যন্ত দুঃখজনক এবং হৃদয়বিদারক” বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ এর কারণ অনুসন্ধান করছে।
মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে ২০১৩ সালে জনপ্রিয় একটি হিন্দু উৎসবে যোগ দিতে আসা তীর্থযাত্রীরা একটি সেতু ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় হুড়োহুড়ি করায় অনেক মানুষ পদদলিত হয়। এতে নদীতে পরে এবং পায়ের নিচে চাপা পড়ে অন্তত ১১৫ জন মারা যায়।
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় ২০১১ সালে একটি ধর্মীয় উৎসবে পদদলিত হয়ে শতাধিক হিন্দু ভক্ত নিহত হন।