অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ট্রাম্প কি তার বহুল ব্যবহৃত ‘উগ্র ইসলামিক জঙ্গিবাদ’ সংক্রান্ত বক্তব্য থেকে সরছেন?


ফাইল ছবি - রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ফিলাডেলফিয়ার টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখছেন (২২ জুন, ২০২৪)
ফাইল ছবি - রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ফিলাডেলফিয়ার টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখছেন (২২ জুন, ২০২৪)

২০১৬ সালে ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় বারবার উঠে এসেছিল ‘উগ্র ইসলামিক জঙ্গিবাদ’ দমনের অঙ্গীকার।

এবারের নির্বাচনকে সামনে রেখে, দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার সুযোগের খোঁজে থাকা ট্র্যাম্প এই শব্দগুলো ব্যবহার করছেন না বললেই চলে। অভিবাসন, অপরাধ ও অন্যান্য অভ্যন্তরীণ ইস্যুর নিচে চাপা পড়ে গেছে জঙ্গিবাদ দমনের অঙ্গীকার।

রবিবার রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে থানা, গির্জা ও প্রার্থনাস্থলে সমন্বিত জঙ্গি হামলায় অন্তত ২০ জন নিহতের ঘটনার পর ট্রাম্পের কৌশল পরিবর্তনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। এক সময় এ ধরনের ঘটনায় অসংখ্য টুইট করার নজির থাকলেও এবার ট্রাম্পের ট্রুথ সোশাল প্ল্যাটফর্মে একবারের জন্যেও এই হামলার উল্লেখ আসেনি।

একসময় যেটা ছিল ভোটারদের একতাবদ্ধ করার কৌশল, এখন কেন তাহলে সে বিষয়ে এ ধরনের নীরবতা? জবাবে বিশেষজ্ঞরা দুইটি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন: জঙ্গিবাদ নিয়ে জনগণের উদ্বেগ কমে যাওয়া এবং মুসলিম আমেরিকানদের ভোট আদায়ের সম্ভাব্য কৌশল।

জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাফল্যের তালিকায় দক্ষিণ সীমান্তের অভিবাসন সমস্যার সমাধান ও গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখার বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন এবং তার নির্বাচনী প্রচারণার কেন্দ্রে রেখেছেন এবং একইসঙ্গে ট্রাম্পকে দেশের প্রতি গুরুতর হুমকি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

কিন্তু গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতি একনিষ্ঠ সমর্থন জানিয়ে বাইডেন অসংখ্য মুসলিম ভোটারদের বিরাগভাজন হয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে ট্রাম্পের জন্য এক বিরল সুযোগের সৃষ্টি হয়েছে।

নিশ্চিতভাবেই, আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের হুমকি নির্মূল হয়নি। গাজায় যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার পরের কয়েক মাসে এফবিআই’র পরিচালক ক্রিস্টোফার রে সহ যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জঙ্গি হামলার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি নিয়ে সতর্কতা জারি করে চলেছেন।

এসব সতর্কবাণীতে জনগণের জঙ্গিবাদ নিয়ে উদ্বেগ বাড়লেও, “সার্বিকভাবে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে এ বিষয়টি নিয়ে যেভাবে উচ্চ মাত্রার উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছিল, বর্তমানে সার্বিকভাবে উদ্বেগের পরিমাণ সে পর্যায়ে পৌঁছেনি” বলে গ্যালাপের এপ্রিল মাসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণার সময় যেসব অঙ্গীকার ও শ্লোগান ব্যবহার করেছেন, সেগুলোর মাত্রা কমিয়ে আনার নজির নেই; এমন কী, প্রেসিডেন্ট থাকার সময়েও না। তবে হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় বছরে পা দেওয়ার পর মুসলিম ও জঙ্গিবাদ থেকে নজর সরিয়ে তিনি সীমান্তের নিরাপত্তা ও অবৈধ অভিবাসনের মতো নতুন বিষয়ের দিকে গুরুত্ব দেন।

এবারের নির্বাচনী প্রচারণাতেও একই ধারা বজায় রেখেছেন ট্রাম্প। তার সাম্প্রতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্ট ও নির্বাচনী বক্তব্যের বিশ্লেষণ করে ভয়েস অফ আমেরিকা লক্ষ্য করেছে, পুনর্নিবাচনের প্রচারণা শুরুর পর মাত্র ২০ বার এ বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করেছেন তিনি। “উগ্র ইসলামিক জঙ্গিদের” কথা মাত্র একবার উল্লেখ করা হয়েছে।

গত জুলাইতে তিনি উল্লেখ করেন, বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর আগের মেয়াদে তিনি যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন, তা আবারও চালু করবেন। সে সময় তিনি উগ্র ইসলামিক জঙ্গিবাদের বিষয়টির উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য, বাইডেন ক্ষমতায় এসে এই নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেন।

XS
SM
MD
LG