অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

পাকিস্তানে কোরআনের কথিত অবমাননার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে হত্যা


পাকিস্তানের লাহোরে ব্লাসফেমির অভিযোগে গ্রেপ্তার এক নারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা সমাবেশ করছে। ১৭ এপ্রিল, ২০২৩। ফাইল ছবি।
পাকিস্তানের লাহোরে ব্লাসফেমির অভিযোগে গ্রেপ্তার এক নারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা সমাবেশ করছে। ১৭ এপ্রিল, ২০২৩। ফাইল ছবি।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল কর্তৃপক্ষ জানায়, উত্তেজিত জনতা একটি পুলিশ স্টেশনে ঢুকে ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত এক বন্দিকে হত্যা করেছে।

খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র সোয়াত জেলায় এক পর্যটক কোরআন অবমাননা করেছে বলে স্থানীয় ঘোষণার পর সন্ধ্যায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়ার আগে বাসিন্দারা লোকটিকে নির্যাতন করে এবং তাকে আটক কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্মকর্তারা জানান, পড়ে জনতা থানার বাইরে জড়ো হয়ে ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ অবমাননার দায়ে ওই ব্যক্তিকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায়।পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে বিমান থেকে গুলি চালায় কিন্তু “সন্দেহভাজনকে” সরিয়ে নেয়ার আগে জনতা আক্রমণ করে। তারা ভবন এবং পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং ঐ ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

জেলা পুলিশ প্রধান জাহিদুল্লাহ খান স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, জনতা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করার পর তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। তিনি আরও জানান, হুড়োহুড়িতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, রাস্তার মাঝখানে একটি পোড়া লাশ ঘিরে ভীড় জমা হয়েছে। ভয়েস অফ আমেরিকা তাৎক্ষণিকভাবে নিরপেক্ষ সূত্র থেকে পাওয়া ফুটেজের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।

খান বলেন, পরে পুলিশ বাহিনী ওই এলাকায় গিয়ে পৌঁছায়। উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা চলছে।

২০২৩ সালের আগস্টে একই ধরনের ব্লাসফেমির অভিযোগে হাজার হাজার মুসলিম বিক্ষোভকারী একটি খ্রিস্টান পাড়ায় হামলা চালায়। দুই খ্রিস্টান ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোরআন অবমাননার অভিযোগে ২১টি গির্জাসহ অসংখ্য সম্পত্তি পুড়িয়ে দেয় তারা।

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইন সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের যুক্তি, এগুলো প্রায়শই ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা ও বিরোধ মেটাতে এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।

সমালোচকরা বলছেন, শত শত সন্দেহভাজন পাকিস্তানের কারাগারগুলোতে বন্দি আছেন। বন্দীদের বেশিরভাগই মুসলিম। ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর প্রতিশোধ স্পৃহা বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে বিচারকদের বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

XS
SM
MD
LG