অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাজেট: কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্যের সমালোচনা করলেন মির্জা ফখরুল


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার বিধানের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থনের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (৮ জুন) রাজধানী ঢাকায়, জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনায় এই সমালোচনা করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের সম্পদ নতুন করে লুটপাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

“বাজেট দেখলেই বোঝা যাবে, রাঘব বোয়ালদের জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়েছে;” মির্জা ফখরুল আরো বলেন। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নতুন বাজেট দেশের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই করবে না।”

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার বিধান রেখে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন।

কালো টাকা সাদা করার বিধানকে ‘মাছ ধরার টোপ’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য হাস্যকর বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি প্রশ্ন করেন, “এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে আপনি আর কতদিন মানুষকে ধোঁকা দিতে পারবেন?”

বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, বাংলাদেশ এক ভয়াবহ সংকটে পড়েছে, দেশের অস্তিত্বকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। “এই সরকার ক্ষমতা দখল করে দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে;” তিনি যোগ করেন।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, সরকার বাংলাদেশের জনগণকে শোষণ ও নিপীড়ন করছে এবং প্রতিনিয়ত দেশের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে। “আমরা সবাই বাংলাদেশের এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই;” আরো বলেন তিনি।

গণতন্ত্র ও ভোটদান এবং জনগণের হারানো অধিকার ফিরিয়ে আনতে সব ভুল বোঝাবুঝি ও সিদ্ধান্ত পরিহার করে সব রাজনৈতিক দল ও সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান বিএনপি মহাসচিব।

টাকা সাদা করার প্রস্তাবে সমর্থন প্রধানমন্ত্রীর

বাজেটে কালো টাকা বৈধ করার প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আগে কালো টাকা বৈধ করতে হবে। শুক্রবার (৭ জুন) আওয়ামী লীগের তেজগাঁও কার্যালয়ে, ছয় দফা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

“নামমাত্র পরিমাণ অর্থ (ট্যাক্স) দিয়ে প্রথমে যথাযথ জায়গায় (ব্যাংকিং চ্যানেলে) টাকা আসতে দিতে হবে এবং তারপর নিয়মিত কর দিতে হবে। মাছ ধরতে গেলে আগে টোপ দিতে হবে;” আরো বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে কালো টাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং যুক্তি দিয়েছেন যে এটি আইনি করদাতাদের নিরুৎসাহিত করবে। “এটা ঠিক নয়, বরং আসল কথা হলো, সবকিছুর দাম বেড়েছে। এক কাঠা জমির মালিক কোটিপতি। কিন্তু কেউই সরকারি দামে জমি বিক্রি করে না বরং বেশি দামে বিক্রি করছে। তাই জমি বিক্রি করে পাওয়া বাড়তি টাকা ব্যাংকে রাখে না;” বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা আনো বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে সর্বশেষ বাজেট ছিলো ৬২ হাজার কোটি টাকা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ছিলো ৬৮ হাজার কোটি টাকা, অথচ তার সরকার এবার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, “এই বাজেটে কিছু মৌলিক দাবির ওপর আলোকপাত করা হয়েছে এবং জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও স্থানীয় শিল্প এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।”

বাজেট ঘাটতি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এবারের বাজেটে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ ঘাটতি রাখা হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশে, এমনকি উন্নত দেশগুলোতেও বাজেট ঘাটতি এর চেয়ে বেশি।

XS
SM
MD
LG