পাকিস্তানের মহাকাশ সংস্থা বৃহস্পতিবার এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করলো। চীনের উত্তর-পশ্চিমে সিচুয়ান প্রদেশের এক উৎক্ষেপণ-স্থল থেকে এটি মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে।
পাকিস্তানের স্পেস অ্যান্ড আপার অ্যাটমোস্ফিয়ার রিসার্চ কমিশনের বক্তব্য অনুযায়ী, পাক-স্যাট-এমএম ওয়ান একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উপগ্রহ যা একাধিক লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম। যোগাযোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানের জন্য এটি ডিজাইন করা হয়েছে।
সুপারকো তাদের ওয়েবাসাইটে বলেছে, “উন্নত যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর পাক-স্যাট-এমএম ওয়ান দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।” পাশাপাশি তারা বলেছে, এই উপগ্রহ চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে “প্রযুক্তিগত সহযোগিতার একটি বিশিষ্ট চিহ্ন।”
সুপারকো আরও বলেছে, “দেশকে ডিজিটাল পাকিস্তানে রূপান্তরের একটি ধাপ হিসেবে এটি বিবেচিত হবে।”
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া বৃহস্পতিবার বলেছে, পাকিস্তানের বহুমুখী যোগাযোগ সংক্রান্ত উপগ্রহ সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে তারা।
জিনহুয়া জানিয়েছে, “৩০ মে, সন্ধ্যা ৮টা ১২ মিনিটে আমার দেশ (চীন) পাকিস্তানের বহুমুখী যোগাযোগ সংক্রান্ত উপগ্রহ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছে। শিচ্যাং উপগ্রহ উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে লং মার্চ ৩বি ক্যারিয়ার রকেট ব্যবহার করা হয়েছে।”
শিনহুয়ার বক্তব্য অনুযায়ী, এই উৎক্ষেপণের মাধ্যমে পরিবহনকারী রকেট ‘লং মার্চ’-এর ৫২৪তম উড়ান সম্পন্ন হলো।
পাকিস্তান সরকারের টুইট অনুযায়ী, সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ উপগ্রহের উৎক্ষেপণ উপলক্ষ্যে দেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
শরিফ বলেছেন, “যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে এই উপগ্রহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং ই-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ ও ই-প্রশাসনকে সবল করবে।”
পাকিস্তানের সরকারি টিভি চ্যানেলে পিটিভির বক্তব্য, উপগ্রহটি গোটা দেশে সেরা মানের ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করবে এবং টিভি সম্প্রচার, সেল্যুলার সংযোগ ও ব্রডব্যান্ডকে আরও মজবুত করবে। এই উপগ্রহের পরিষেবা আগস্ট মাস থেকে শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বেইজিং ও ইসলামাবাদের মধ্যে মহাকাশ সংক্রান্ত সহযোগিতার শুরু হয়েছিল ১৯৯০ সালে। সেই সময় পাকিস্তান একটি যোগাযোগ সংক্রান্ত উপগ্রহ নির্মাণ করেছিল এবং সেটি মহাকাশে পাঠিয়েছিল চীনের লং মার্চ ২ই রকেট।
যুক্তরাষ্ট্রের হাউস পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির বক্তব্য অনুযায়ী, বেইজিং মহাকাশ বিষয়ক এই সহযোগিতাকে বিআরআইয়ের (বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ) অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখছে। পাকিস্তানের এই উদ্যোগকে তারা “স্পেস সিল্ক রোড” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
চীনের স্পেস সিল্ক রোডের লক্ষ্য হল, তাদের বাইদু নেভিগেশন উপগ্রহ ব্যবস্থার (বিডিএস) মাধ্যমে বিআরআইয়ের অংশীদার দেশগুলোকে যুক্ত করা।