বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও অন্যতম বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে দলটি।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
তারা জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিশেষ মোনাজাতেও অংশ নেন।
বিএনপির বিভিন্ন শাখা ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও জিয়ার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে ১৫ দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিএনপি ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, সেমিনার, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, কালো ব্যাজ ধারণ, সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র প্রকাশ, দুস্থদের মাঝে খাদ্য ও ত্রাণ বিতরণ।
মঙ্গলবার (২৮ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে জিয়ার মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচি শুরু হয়।
বুধবার (২৯ মে) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জিয়াউর রহমানের স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি।
দিবসটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
শুক্রবার ৩১ মে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করবে দলটি।
দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বাণীতে জিয়াউর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “এই মহান উদার গণতান্ত্রিক নেতা জিয়াউর রহমানের জনপ্রিয়তা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা কখনোই মেনে নিতে পারেনি। এই ষড়যন্ত্রকারীরা ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে। এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে জাতি একজন মহান দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী নেতাকে হারিয়েছে।”
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর সেনাবাহিনী প্রধান হন জিয়াউর রহমান। এর আগে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান ছিলেন তিনি।
একই বছর নভেম্বরে অভ্যুত্থান–পাল্টা অভ্যুত্থানের পর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হন। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন।
জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে একদল সেনাকর্মকর্তার হাতে নিহত হন তিনি।
জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন।
তাঁর জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলী থানার বাগবাড়ীতে।