চট্টগ্রামে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ১২টি দলের ৫০ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পতেঙ্গায় র্যাব-৭ এর এলিট হলে অনুষ্ঠানিকভাবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকার জলদস্যুরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে আত্মসমর্পণ করে অস্ত্র জমা দেন।
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার প্রতিশ্রুতি দেয় তারা।
র্যাব-৭ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক শরীফ-উল-আলম বলেন, ৫০ জন জলদস্যুর মধ্যে একজন নারী এবং তাদের মধ্যে তিনজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় রয়েছে।
অনুষ্ঠানে ৩৫টি বন্দুক, ১৮টি এসবিবিএল, ১৭টি ওয়ান শাটার গান, ১টি গান, ১টি পিস্তল, ১টি রিভলবার, ৩টি বিদেশি পিস্তল, ১টি এসএমজি, ২টি এয়ারগানসহ আন্তর্জাতিক অস্ত্র জমা দেওয়া হয়।
র্যাব-৭ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত বাঁশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ৩৪২ জন জলদস্যুকে গ্রেপ্তার এবং তাদের কাছ থেকে ২ হাজার ৬০৩টি অস্ত্র ও ২৯ হাজার ১২৩টি গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও র্যাব
২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও পররাষ্ট্র দফতর পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়।
ওই কর্মকর্তারা হলেন র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খান। তাঁদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।
এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ এবং র্যাব ৭–এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), মাদক দ্রব্যের বিরুদ্ধে সরকারের লড়াইয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত।
বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, তারা আইনের শাসন, মানবাধিকারের মর্যাদা ও মৌলিক স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে ক্ষুণ্ন করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। র্যাব হচ্ছে ২০০৪ সালে গঠিত একটি সম্মিলিত টাস্ক ফোর্স। তাদের কাজের মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধীদের কর্মকান্ড সম্পর্কে গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং সরকারের নির্দেশে তদন্ত পরিচালনা করা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বা এনজিওদের অভিযোগ হচ্ছে যে, র্যাব ও বাংলাদেশের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ ব্যক্তির গুম হয়ে যাওয়া এবং ২০১৮ সাল থেকে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের জন্য দায়ী। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এই সব ঘটনার শিকার হচ্ছেন বিরোধী দলের সদস্য, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা।