যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গাজার যুদ্ধ নিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হওয়ায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার আন্দোলন ও প্রতিবাদের অধিকারের পক্ষে সওয়াল করেন, তবে তিনি জোর দিয়ে জানান যে, “শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।”
“গণতন্ত্রের জন্য ভিন্নমত অপরিহার্য,” ওয়াইট হাউসে তিনি বলেন, “তবে ভিন্নমত যেন বিশৃঙ্খলার দিকে চলে না যায়।”
গত কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে কারণ বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাস থেকে ছাউনি ও তাঁবু সরাতে প্রত্যাখ্যান করছে এবং বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের জোর করে সরিয়ে দিতে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রশাসকরা। এর ফলে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে উভয় পক্ষ। এই ঘটনা রাজনীতিক থেকে গণমাধ্যম, সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
বাইডেন বলেছেন, তিনি আধা-সামরিক জাতীয় রক্ষী বাহিনী (ন্যাশনাল গার্ড) পাঠানোর আহ্বানকে সমর্থন করেন না। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ নিয়ে তার যে অবস্থান তা পুনর্বিবেচনা করতে চাপ সৃষ্টি করেনি এই বিক্ষোভ।
ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট মাঝে মাঝে ইসরায়েলের আচরণের সমালোচনা করেছেন, তবে সে দেশে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছেন তিনি।
নর্থ ক্যারোলাইনা সফরের জন্য ওয়াইট হাউস ত্যাগ করার কয়েক মুহুর্ত আগে তিনি দেশে চলমান বিক্ষোভ নিয়ে নীরবতার কয়েক দিন পর সংক্ষেপে এই মন্তব্য করেন।
রিপাবলিকানরা এই অস্থিরতার ঘটনাকে তাদের প্রচারণার হাতিয়ার বানানোর চেষ্টা করেছে এবং বাইডেন বলেছেন, “রাজনৈতিক ফায়দা” তুলতে এই পরিস্থিতিকে ব্যবহারের প্রচেষ্ঠাকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এক সপ্তাহের বেশি সময় আগে বিক্ষোভ নিয়ে বাইডেন প্রকাশ্যে শেষবার মন্তব্য করেছিলেন। সেখানে তিনি “ইহুদি-বিদ্বেষী বিক্ষোভ” ও “ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে কী ঘটছে তা যারা বোঝে না” তাদের নিন্দা করেছিলেন।
ওয়াইট হাউসের সমালোচনা এবং ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য বন্ধ করে দিতে বিক্ষোভকারীদের দাবিকে বাইডেন প্রত্যাখ্যান করা সত্ত্বেও, এই বিশৃঙ্খলার জন্য রিপাবলিকানরা ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংসদের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রেপ্রেসেন্টেটিভস-এর স্পিকার মাইক জনসন মঙ্গলবার বলেন, “আমরা চাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এই সমস্যা নিয়ে কথা বলুন এবং জানান যে, এটা ভুল। কলেজ ক্যাম্পাসগুলিতে এখন যা ঘটছে তা ভুল।”
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডলান্ড ট্রাম্প যিনি তার দলের সম্ভাব্য মনোনীত প্রার্থী, বুধবার উইসকনসিনে এক প্রচারণা সভা থেকে বাইডেনকে সমালোচনা করেছেন।
ট্রাম্প বলেন, “উগ্র চরমপন্থী ও অতি-বাম আন্দোলনকারীরা কলেজ ক্যাম্পাসগুলিতে যে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তা সম্ভবত আপনারা লক্ষ্য করেছেন। এবং বাইডেনকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি কিছুই বলেননি।”
বাইডেন ১৯ মে একটি কলেজে সফরে করবেন। এই সময় আটলান্টার মোরহাউস বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।