অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

খালেদা জিয়া: বিএনপি প্রধান হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া

বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে মাত্র একদিনের চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতে গুলশানের বাসায় ফিরেছেন।

তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, “মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

তিনি জানান, খালেদা জিয়াকে বাসায় রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হবে।

এদিকে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, খালেদা জিয়া রাত ৮টা ২০ মিনিটে হাসপাতাল থেকে বের হন এবং রাত ৯টার দিকে বাসায় পৌঁছান।

এর আগে বুধবার (১ মে) রাতে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি এবং করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে সিসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।

জাহিদ হোসেন বলেন, বুধবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের বেশ কয়েকটি জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে।

পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে মেডিকেল বোর্ড তাঁর চিকিৎসার পরবর্তী কোর্স ঠিক করে।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদ্‌রোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।

২০২৩ সালের ৯ অগাস্ট খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে নিতে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়। কিন্তু সরকার অনুমতি দেয়নি। এরপর পাঁচ মাসের বেশি সময় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি।

২০২৩ সালের ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি বৃদ্ধি এবং লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগার ইন্ট্রাহেপাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শন্ট (টিআইপিএস পদ্ধতি) নামে পরিচিত হেপাটিক পদ্ধতি সম্পন্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ মেডিসিনের চিকিৎসক হামিদ রব, ক্রিস্টোস জর্জিয়াডেস ও জেমস পি এ হ্যামিল্টন ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশে এসে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে টিআইপিএস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেন।

২০২১ সালের নভেম্বরে লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন চিকিৎসকেরা।

বিএনপির চেয়ারপারসনের পরিবারও বিভিন্ন সময় সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, দুর্নীতির মামলায় সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পাওয়ায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে পুরান ঢাকার কারাগারে পাঠানো হয়। পরে একই বছর দুর্নীতির আরেকটি মামলায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে গুলশানের বাসায় অবস্থান এবং দেশ ত্যাগ না করার শর্তে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়। এরপর থেকে একাধিকবার তাঁর জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

XS
SM
MD
LG