অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

নতুন আন্দোলন শুরু করার আহ্বান জানালেন বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল


বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে ও ব্যাপক দুর্নীতি নির্মূলের লক্ষ্যে নতুন করে আন্দোলন শুরু করার জন্য দলমত নির্বিশেষে সব মানুষের মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (১ মে) রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে এ আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপির সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এ সমাবেশের আয়োজন করে।

বিকেলে প্রচণ্ড তাপমাত্রার মধ্যেও নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে দলীয় সদর দপ্তরের সামনে ট্রাকে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। প্রচণ্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে দুপুরের পর থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন নেতাকর্মীরা।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই মে দিবসে আমি সকল রাজনৈতিক দল ও মতাদর্শিক সংগঠন বিশেষ করে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আসুন আমাদের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার এবং মানুষের অধিকার ফিরে পাওয়ার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে আন্দোলন করি। এই মে দিবসে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।”

সমাবেশে সরকারের অর্থনৈতিক নীতির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “সরকার ব্যাংক ও অন্য অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। তারা গ্রামাঞ্চলে এমনকি বিরোধী দলের লোকদের সমস্ত ব্যবসা দখল করেছে।”

সরকার অতীতের পদ্ধতি থেকে ভিন্ন হয়ে একদলীয় শাসন কায়েম করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, “দেশে একতরফা শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা হচ্ছে। এবার তাদের কৌশল ভিন্ন। আগের মতো সংসদে বিল পাস করে তারা এখন বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চায় না। গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে তারা এটা করতে চায়।”

গণতন্ত্রের প্রতি বিরোধীদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, “আমাদের একটা কথা সব সময় মনে রাখতে হবে, আমরা অতীতে কখনো পরাজিত হইনি, ভবিষ্যতেও পরাজিত হব না। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আমরা আরও ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছি।”

মির্জা ফখরুল আক্ষেপ করে বলেন, মে দিবস এমন এক সময়ে পালিত হচ্ছে যখন বাংলাদেশের মেহনতি মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ: যাদের জন্মই অগণতান্ত্রিক তারাই গণতন্ত্রের কথা বলে

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যাদের জন্মই অগণতান্ত্রিক আর প্রতিনিয়ত গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য অপচেষ্টা চালায়, সেই বিএনপি এখন গণতন্ত্রের কথা বলে, এটিই হচ্ছে দুঃখজনক। এটি যেন, চোরের মায়ের বড় গলা।

১০ এপ্রিল (বুধবার) দুপুরে চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেছিল। ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়েছিল। ড. মঈন খান আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতারা সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্য সন্নিবেশিত হয়ে বিএনপি গঠন করেছিলেন।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

তিনি বলেন, “শুধু বিএনপির জন্মই অগণতান্ত্রিক নয়, তারা দেশে সবসময় গণতন্ত্র হরণ করার জন্য অপচেষ্টা চালিয়েছে এবং এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে তাদের হাত ছিল। নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত এবং গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই সেটি ঘটানো হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং জঘন্য মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা তারা চালিয়েছিল।”

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, “বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচনে ৫০০ নির্বাচনি কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল এবং নির্বাচনি কর্মকর্তা ও বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়েছিল। সেটির উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনকে ভণ্ডুল করা, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও একই প্রচেষ্টা ছিল। সর্বশেষ ২০২৪ সালের বিগত নির্বাচন বর্জন করার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালানো হয়।”

XS
SM
MD
LG