ইরানের সামরিক বাহিনী ও তার কিছু মিত্র দেশ ইসরাইলে নজিরবিহীন আকাশ হামলা চালানোর প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে ইসরাইল।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল কাটজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন, তিনি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে (আইআরজিসি) সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণার করার জন্য ৩০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে তালিকাভুক্ত করা দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম। দেশটির জন্য পূর্বের জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। গত বছর অক্টোবর থেকে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি লক্ষ্য করে নতুন কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে, ইসরাইলে হামলার পর সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমনের জন্য বিশ্ব নেতাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে ইসরাইল সামরিকভাবে প্রতিশোধ নিতে আগ্রহী বলেই মনে করা হচ্ছে।
সোমবার ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তারা সোমবার বলেছেন,শনিবার ছোঁড়া প্রায় ৩৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের জন্য তেহরানকে অবশ্যই মূল্য দিতে হবে।
দেশটির সামরিক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি বলেছেন, “ইরানের হামলার উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে।”
এই পরিস্থিতিতে, ইসরাইলের কট্টর সমর্থক হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্র দেশটির নেতাদের উদ্দেশ্যে সংযম প্রদশর্নের আহ্বান জানিয়েছেন। পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি মেজর জেনারেল প্যাট রাইডার বলেন, ইরানের প্রায় ৯৯ শতাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রই ধ্বংস হয়ে গেছে। সেটাই তাদের বড় পরাজয়। সোমবার হোয়াইট হাউস এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান প্রকাশ করেছে।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কারবি, ইসরাইল কৌশলগতভাবে আগের চেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে আছে বলে সংবাদদাতাদের জানান।
ইরানের নিক্ষেপিত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন মোকাবেলায় ইসরাইলকে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জর্ডান, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করে।
পেন্টাগন সোমবার রাতে জানিয়েছে , যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সাথে কথা বলার সময় ইসরাইলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অবিচল সমর্থন এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে তাদের সমর্থনের কথা পুনরায় ব্যক্ত করেছেন।
এই হামলায় ইরানের সাথে ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনের বাহিনীও অংশ নিয়েছে বলে জানায় তারা।
তবে শনিবারের হামলাকে সফল হিসেবেই মনে করছে ইরান। তারা বলেছে , সিরিয়ায় তাদের দূতাবাসে সন্দেহভাজন ইসরাইলি বিমান হামলায় ১ এপ্রিল দুই সিনিয়র কমান্ডারসহ ইরানের বিপ্লবী গার্ডের ৭ জন কর্মকর্তা নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় এই হামলা চালিয়েছে তারা।
এদিকে রবিবার, তুরস্ক, জর্ডান ও ইরাকের কিছু কর্মকর্তা বলেছেন, ব্যাপক প্রাণহানি এড়াতে এবং শত্রুতা যাতে দীর্ঘায়িত না হয় সেজন্য হামলার বিষয়ে আগে থেকেই সতর্কবার্তা দিয়েছে ইরান।
তবে সোমবার তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তেহরানের হামলাটি প্রতীকী ছিল বলে যে খবর রটেছে সেটা সত্য নয় বলে অস্বীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারাও।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি এবং রয়টার্স থেকে নেওয়া।