পাকিস্তানের ফেডারেল হাইকোর্টের বেশিরভাগ বিচারক যৌথভাবে দেশের সামরিক বাহিনী পরিচালিত গুপ্তচর সংস্থাকে বিচারিক ফলাফলকে প্রভাবিত করার জন্য বিচারক এবং তাদের আত্মীয়দের অপহরণ, নির্যাতন এবং শয়নকক্ষের ভেতরে গোপন ভিডিও নজরদারির মাধ্যমে ভয় দেখানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।
চলতি সপ্তাহে প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের অধিকাংশ বিচারকের কাছে লেখা বিরল এক চিঠিতে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের আট সদস্যের মধ্যে ছয়জন অভিযোগ নথিভুক্ত করেছেন এবং অভিযোগ সমাধানে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।
এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বুধবার সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতির জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি কাজী ফয়েজ ইসা।
পঁচিশে মার্চের ওই চিঠিতে আইএসআইকে ‘নির্দিষ্ট ফলাফলের জন্য’ বিচারিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করার জন্য দোষারোপ করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর একজন জেনারেল এই গুপ্তচর সংস্থাটি পরিচালনা করেন। পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর নির্দেশে নির্বাচিত সরকার গঠন বা ভাঙার জন্য আইএসআই কুখ্যাত।
এই অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য অনুরোধ করা হলে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ভয়েস অফ আমেরিকার সেই অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
ইমরান খানের মামলায় 'হস্তক্ষেপ'
এই চিঠিতে বেশ কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে আইএসআই কর্মকর্তারা জোরজবরদস্তি ও ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে “কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মামলাসহ বিভিন্ন মামলার ফলাফল প্রভাবিত করার” চেষ্টা করেছে।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে রাষ্ট্র-সমর্থিত একটি মামলার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, “আইএসআই-এর অপারেটিভরা বিচারকদের ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করেছিল।”
এতে বলা হয়, বিচারকরা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার আশঙ্কা থেকে তাদের বাড়ির জন্য অতিরিক্ত সুরক্ষা চেয়েছিলেন।
চিঠিটি পাকিস্তানের বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়।
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নজিরবিহীন অভিযোগের ফলে আইনজীবীদের সংগঠন, ইমরান খানের বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই এবং স্বাধীন সমালোচকরা একটি স্বাধীন তদন্ত এবং জড়িতদের বিচারের আহ্বান জানিয়েছে।
বিচার বিভাগের কাজে আইএসআই কর্মীদের হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রকাশ্যে আনার জন্য তারা বিচারকদের প্রশংসা করেছেন।