পাকিস্তানের সংসদ সদস্যরা শনিবার আসিফ আলি জারদারিকে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করেন, তাকে দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানত এই আনুষ্ঠানিক সাংবিধানিক পদে ফিরিয়ে আনা হল।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নিহত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ৬৮ বছর বিপত্নীক জারদারি, জাতীয় ও চারটি প্রাদেশিক সংসদের সদস্যদের থেকে ৪১১টি ভোট পেয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মেহমুদ খান আচকজাই পেয়েছেন ১৮১ ভোট।
জারদারি ক্ষমতাসীন জোটের অভিন্ন প্রার্থী ছিলেন, যার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ, বা পিএমএল-এন পার্টি।
এর পূর্বে তিনি ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন, যখন তার পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পিপিপি দেশটি শাসন করছিল। রবিবার শপথ নেবেন তিনি।
আচকজাইকে কারাগারে বন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই এবং এর সহযোগীরা মনোনীত করেন।
একটি সরকারি বিবৃতিতে শরিফের উদ্ধৃতি দিয়ে জারদারিকে আবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানানো হয়। বিবৃতিটিতে বলা হয়, তিনি “ফেডারেশনের শক্তির একটি প্রতীক হবেন।”
৮ ফেব্রুয়ারী পাকিস্তানের জাতীয় এবং চারটি প্রাদেশিক আইনসভার জন্য সাধারণ নির্বাচনের পরে প্রেসিডেন্টের নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়। খানের মিত্রদের ক্ষমতার বাইরে রাখতে শরীফের সামরিক বাহিনী-সমর্থিত পিএমএল-এন পার্টিকে নির্বাচনে জিতানোর জন্য নির্বাচনে কারচুপি করেছে বলে ব্যাপক অভিযোগ আনা হয়।
খান, একজন ক্রিকেট নায়ক থেকে যিনি প্রধানমন্ত্রী হন, তাকে ২০২২ সালে তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে পদ থেকে অপসারিত করা হয়।
৭১ বছর বয়সী ক্ষমতাচ্যুত পাকিস্তানি নেতা তখন থেকে বেশ কয়েকটি আইনি প্রতিবন্ধকের মুখোমুখি হয়েছেন।
খান বর্তমানে দুর্নীতি, জালিয়াতিমূলক বিয়ে এবং ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁস করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
খান কোনও অন্যায় করেছেন বলে অস্বীকার করেন এবং পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীকে এর পেছনে থাকার জন্য দায়ী করেন, যা তিনি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তুচ্ছ মামলা বলে অভিহিত করেন।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে সামরিক বাহিনী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিকে শাসন করেছে। রাজনীতিবিদরা বলেন দেশটির সেনাবাহিনীর জেনারেলরা ক্ষমতায় না থাকা সত্ত্বেও বেসামরিক বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করে, যা নিরাপত্তা সংস্থাটি অস্বীকার করে।