পাকিস্তানে জাতীয় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো বৃহস্পতিবার, তবে ব্যাপক সহিংসতা ও দেশজুড়ে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যাহত করায় ভোটের উপর কালো ছায়া ঘনীভূত হয়েছে এবং ইতোমধ্যেই বিতর্কিত এই ভোটের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশের ভোটকেন্দ্রগুলি স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৯ ঘন্টা ধরে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া চলে এবং এই প্রক্রিয়া মূলত শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছে বলা যায়।
ভোট শুরুর ঠিক আগে খুব সকালে এ দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রায় ১২৮ মিলিয়ন যোগ্য ভোটারের উদ্দেশে ঘোষণা করে যে, “নিরাপত্তাগত সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রশমিত করতে” ও “আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে” ফোন পরিষেবা ব্যাহত করা হবে।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, নির্বাচনে যেই জয়ী হোক না কেন তিনি সেই জনগণের জন্য কাজ করবেন, যারা দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে গভীরভাবে হতাশ, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় তাদের আস্থা সামান্যই এবং দেশের অর্থনৈতিকভাবে টিকে থাকা নিয়ে তারা চূড়ান্তভাবে উদ্বিগ্ন।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগ (নওয়াজ) পার্টিকে শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর পছন্দের বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, শেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কারাবন্দি। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি বা পিটিআইয়ের উপর সেনাবাহিনী-সমর্থিত দমনপীড়নের ফলে অনেকেই এই ভোটে হতাশ।
ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার কয়েক ঘন্টা পর অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয় বলেছে, দেশজুড়ে মোবাইল পরিষেবা আংশিকভাবে চালু করা হচ্ছে এবং শীঘ্রই পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।
ফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করায় ব্যাপকভাবে অভিযোগ উঠেছে যে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী-সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকার যাতে ভোটে কারচুপি করতে পারে তাই এমনটা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ইমরান খানের দলের অনুগত প্রার্থীদের জয় থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগও উঠেছে।
জনসংখ্যার নিরিখে বিশ্বে পঞ্চম স্থানে থাকা পাকিস্তানের (আনুমানিক জনসংখ্যা ২৪১ মিলিয়ন) হাজার হাজার ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নিরাপত্তা দিতে সাড়ে ছয় লাখের বেশি সৈন্য, আধা-সামরিক বাহিনী ও পুলিশ কর্মকর্তা মোতায়েন করেছিল সে দেশের সরকার।