অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ইসরাইল-এ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে চরম সমস্যায় ভারতীয় দূতাবাস কর্মী থেকে বহু ভারতীয় নাগরিক


হামাস-এর হামলা ইসরাইল-এ শুরু হওয়ার পর সেই দেশের বিভিন্ন শহরে আটকে পড়েছেন বহু ভারতীয়।
হামাস-এর হামলা ইসরাইল-এ শুরু হওয়ার পর সেই দেশের বিভিন্ন শহরে আটকে পড়েছেন বহু ভারতীয়।

গত শনিবার ৭ অক্টোবর হামাস-এর হামলা ইসরাইল-এ শুরু হওয়ার পর সেই দেশের বিভিন্ন শহরে আটকে পড়েছেন বহু ভারতীয়। তবে সংখ্যাটা এখনও স্পষ্ট নয়। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, আটকে পড়া ভারতীয়দের বেশির ভাগই দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যর বাসিন্দা। তারমধ্যে কর্নাটক, কেরল ও তামিলনাড়ুর বাসিন্দা বেশি। ডাক্তার, নার্স, শিক্ষক হিসাবে ইসরাইল-এ দক্ষিণ ভারতীয়দের কদর বরাবরই বেশি। আবার উচ্চশিক্ষার জন্যও দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির পড়ুয়ারা বেশি সংখ্যায় ইসরাইল-এর রাজধানী তেল আভিবের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে যান।

তাদেরই একজন কেরলের তিরুবনন্তপুরমের বাসিন্দা আঙ্গাথা। তিনি তেল আভিবের বার ইলান বিশ্ব বিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন। গত মাসে তার কাছে বেড়াতে গিয়েছেন বাবা বিজয়কুমার ও মা উষা দেবী। বিজয়কুমারের হাই ব্লাড প্রেশার এবং প্রস্টেটের সমস্যা আছে। উষা দেবীও নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। মেয়ের সঙ্গে সময় কাটাতে, মেয়েকে সঙ্গ দিতে অবসরপ্রাপ্ত বিজয়কুমার তেল আভিব গিয়েছিলেন। চরম উৎকণ্ঠা আর শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে দিন কাটাচ্ছে এই পরিবার।

সংবাদমাধ্যমকে বিজয়কুমার বলেছেন, "মেয়েকে নিয়ে রবিবারের বিমানে দেশে ফেরার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু শেষ মূহূর্তে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট বাতিল হয়ে যায়। তাছাড়া বিমান বন্দর পৌঁছানোও বড় ঝক্কি। কখন সাইরেন বেজে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে ছুটতে হবে বাঙ্কারের খোঁজে।"

আঙ্গাথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের হস্টেলে থাকতেন। বাবা-মা আসার পর এক সহপাঠীর বাড়িতে গিয়ে উঠেছেন। সোমবার বিজয়কুমার মেয়ের সহপাঠী ও স্ত্রীকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন ওষুধের খোঁজে। দোকানপাট বেশিরভাগই বন্ধ। খোলা ওষুধের দোকানে প্রেসারের ওষুধ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে এসেছে। মেলেনি প্রস্টেটের ওষুধও। এদিকে, রক্তচাপ বাড়ছে। তার উপর যুদ্ধের আতঙ্ক তো আছেই।

সোমবার ৯ অক্টোবর বিকালে ওষুধ কিনতে বেরিয়ে বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন তারা। হঠাৎই যুদ্ধের সাইরেন বেজে ওঠে। প্রশাসনের নির্দেশ সাইরেন বাজা মাত্র বাঙ্কারে আশ্রয় নিতে হবে। কিন্তু রাস্তার ওই এলাকায় বাঙ্কার ছিল না। তারা আশপাশের আবাসনের বাঙ্কারে আশ্রয় নিতে যান। দেখেন আবাসনের গেটে তালা ঝুলছে। ডাকাডাকি করেও সাড়া মেলেনি। অচেনা অজানা লোককে কেউ আশ্রয় দিতে চাইছেন না। হামাস জঙ্গিরা তেল আভিবেও ঢুকে পড়েনি, এমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছে না। তার উপর গুজবও ছড়াচ্ছে।

নিরুপায় হয়ে তিনজন ছোটেন অদূরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে। সেখানেও তালা ঝুলছে। গেট কিপাররা তালা দিয়ে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন। বিজয়কুমার জানিয়েছেন, অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে কাটাতে হয় বহুক্ষণ।

এদিকে, ওষুধের অভাবে শারীরিক অবস্থা ভাল নেই তার। ওষুধের জন্য সাহায্য চেয়ে তেল আভিবের ভারতীয় দূতাবাসে যোগাযোগ করেছিলেন। সহায়তা মেলেনি। দূতাবাস কর্মীদেরও ঘন ঘন বাঙ্কারে গিয়ে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। আকাশে সন্দেহজনক কিছু দেখলেই সাইরেন বেজে উঠছে। তাতেই আতঙ্ক গ্রাস করছে গোটা এলাকাকে।

XS
SM
MD
LG