৪ অক্টোবর, বুধবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় - অনবরত বৃষ্টি, মেঘভাঙা বৃষ্টি, বাঁধ ভেঙে পড়া, ইত্যাদি কারণে বিধ্বস্ত হয়ে যায় ভারতের উত্তর-পূর্বের সিকিম। প্রায় এক সপ্তাহের কাছাকাছি সময় কেটে গিয়েছে বেশ। সোমবার ৯ অক্টোবর, নতুন সপ্তাহের শুরুতে পাহাড়ের আকাশে কেটেছে মেঘ। উঠেছে ঝলমলে রোদ। এদিন থেকেই জোরকদমে শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। ইতিমধ্যে পশ্চিম ও দক্ষিণ সিকিমে যাওয়ার সবুজ সংকত মিলেছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে সিকিম।
প্রকৃতির তাণ্ডবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর সিকিম। দুর্যোগে ভেঙে গিয়েছিল বাড়িঘর, রাস্তাঘাট। উদ্ধারের জন্য লাচেন পর্যন্ত পৌঁছনোই যাচ্ছিল না। সড়কপথে গোটা দেশের থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল উত্তর সিকিম। এদিকে বৃষ্টি না থামায় বুধবারের পর থেকে উদ্ধারকাজে নামতে পারছিলেন না জওয়ানেরা। প্রায় চার হাজার পর্যটক ওই এলাকায় আটকে ছিলেন। অবশেষে সোমবার রোদ ওঠায় নতুন করে উদ্ধারে নামতে পেরেছে সেনা।
আকাশে মেঘ কাটতেই উত্তর সিকিমের লাচেন উপত্যকায় আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করার কাজ শুরু হয়েছে। পূর্ব সিকিম থেকে লাচেনের দিকে সোমবার সকাল থেকেই একের পর এক হেলিকপ্টার পাঠায় বায়ুসেনা। এই পদ্ধতিতেই উদ্ধার করে নামিয়ে আনা হচ্ছে আটকে পড়া পর্যটকদের। অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে উত্তর সিকিম থেকে সড়কপথেও গ্যাংটকে নামিয়ে আনা হয়েছে পর্যটক এবং শ্রমিকদের।
অন্যদিকে, ইতিমধ্যে সিকিমের কোন অংশে পর্যটকরা যেতে পারবেন তা নিয়ে সে রাজ্যের সরকারের তরফে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, আপাতত সিকিমের পশ্চিম এবং দক্ষিণ প্রান্তে পর্যটকদের প্রবেশের জন্য অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিবৃতিতে পূর্ব ভারতের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের দার্জিলিং এবং কালিম্পং হয়ে পর্যটকদের সিকিম যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু উত্তর সিকিমের ছন্দে ফিরতে আরও সময় লাগবে বলেই প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এক রাতের মধ্যেই প্রবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে সিকিম। হড়পা বানে বিপজ্জনকভাবে বাড়তে থাকে উত্তর এবং পূর্ব সিকিম এলাকায় তিস্তা নদীর জল। তছনছ হয়ে যায় বিস্তীর্ণ এলাকা। ভেসে যায় একাধিক সেতু সহ বিভিন্ন রাস্তা। সরকারের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের মোট ১৪টি সেতু দুর্যোগের কারণে ভেঙে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সিকিমে নিখোঁজ হয়েছেন ১০৫ জন। আহতের সংখ্যা ২৬। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।