অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বানে প্রবল দুর্যোগ ভারতের সিকিমে, ভাঙল ১৪টি সেতু, বাড়ছে নিখোঁজ-মৃতের সংখ্যা, আটকে অসংখ্য পর্যটক


মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা নদী।
মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা নদী।

ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য সিকিম। উত্তর সিকিমে লোনক হ্রদে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা নদী। পাহাড় থেকে ছুটে আসা হড়পা বানে ১৪টা সেতু ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে। ২২ জন সেনা জওয়ান-সহ ৮২ জন নিখোঁজ। বুধবার ৪ অক্টোবর ভারতীয় সময় রাত অবধি ১০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এর মধ্যে চার জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে।

বুধবার ভারতীয় সময় সকালে সিকিমের গ্লেসিয়ার লেক লোহনাক লেকে ক্লাউডবার্স্টের ঘটনা ঘটে। যার জেরে হড়পা বান দেখা দেয় তিস্তা নদীতে। সিকিমের চুংথাং-এ একটি নদীবাঁধ সম্পূর্ণ রূপে ভেঙে পড়েছে। ওই এলাকা প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। সিকিম সরকার ইতিমধ্যেই এই ঘটনাকে বিপর্যয় ঘোষণা করেছে। তিস্তা নদীর হড়পা বান ভাসিয়ে দিয়ে সেনার ছাউনিও। এর জেরে বেশ কয়েক জন সেনা জওয়ান নিখোঁজ হয়েছেন। এই হড়পা বানের জেরে সিকিমে ১৪টি ব্রিজ পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে বলে সিকিম সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে।

যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় ধসও নেমেছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর। এই ঘটনার জেরে বাকি সিকিম থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চুংথাম।

ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ড জানিয়েছে, মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমের লাচেন উপত্যকার লোনক হ্রদ উপচে পড়ে। চুংথাম বাঁধ ভেঙে বিপুল পরিমাণ জল চলে আসে তিস্তা নদীতে। তিস্তার হড়পা বানে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিস্তীর্ণ অংশ ভেঙে পড়েছে। ইতিমধ্যে তিস্তায় লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। বুধবার ভারতীয় সময় সকালে ২৩ জন জওয়ান নিখোঁজ থাকলেও পরে এক জন জওয়ানের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তিনি আহত হলেও তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে।

এই অবস্থায় উত্তর এবং পূর্ব সিকিমের প্রশাসন সেখানে ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করেছে। মঙ্গনের পুলিশ সুপার সোনম দেতচু জানিয়েছেন, “অতিরিক্ত বৃষ্টি এবং হড়পা বানের কারণে অনেক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে এখন যাওয়াটাই বিপজ্জনক। অনেক এলাকাতেই রাস্তার কার্যত কোন অস্তিত্ব নেই। এই সময়ে আমরা কাউকে সেখানে আসার জন্য অনুমতি দিতে পারি না।”
এদিকে হড়পা বানের জেরে অন্তত হাজার তিনেক পর্যটক নানা এলাকায় আটকে পড়েছেন।
তাদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুজোর মরশুম অর্থাৎ পর্যটনের অন্যতম মরশুমের শুরুতেই এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিস্থিতিতে প্রবল দুশ্চিন্তায় সিকিম প্রশাসন। শুধুমাত্র তিস্তা নদীর নয়, জল বাড়ছে খোনাক নদীরও। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিংটাম, রংপো, মেল্লি সহ বিভিন্ন এলাকা। এদিন সিংটাম এলাকা পরিদর্শন করেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পি এস তামাং। তিনি জানান, যত দ্রুত সম্ভব সেখানের রাস্তা মেরামত করা হবে। তবে তার জন্য যে অনেকটা সময় লাগবে তাও জানান তিনি।
XS
SM
MD
LG