মঙ্গলবার ৩ অক্টোবর ভারতীয় সময় সন্ধ্যায় রাজনৈতিক মহলে বিতর্কিত ঘটনা ঘটল ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির কৃষিভবনে। দিল্লিতে অবস্থানরত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল সাংসদ-মন্ত্রীদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি দেখা করেননি, সেইসঙ্গে তাদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হল সেখান থেকে।
নয়াদিল্লিতে পুরনো সংসদ ভবনের অদূরেই কৃষি ভবন। সেখানে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর দফতর। মঙ্গলবার গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক থেকেই সময় দেওয়া হয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের নেতা ও সাংসদদের। ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি তাদের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছিলেন। সেই মোতাবেক অভিষেক, রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার সহ প্রায় চল্লিশ জন তৃণমূল নেতা ও সাংসদ গিয়েছিলেন কৃষিভবনে। বাংলা থেকে বঞ্চিতদের চিঠি নিয়ে গিয়েছিলেন তারা। কনফারেন্স রুমে বসিয়ে তাদের প্রথমে চা বিস্কুটও দিয়ে আতিথেয়তা জানানো হয়। কিন্তু দেড় ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর জানানো হয় যে মন্ত্রী দেখা করবেন না।
তৃণমূল নেতা-সাংসদদের সঙ্গে দেখা না করলেও এদিন বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে দেখা করতে রাজি না হওয়ায় অভিষেক জানিয়ে দেন, মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না করে তারা কৃষিভবন থেকে বেরোবেন না। এ কথা জানিয়ে তারা কৃষি ভবনের লবিতে ধর্নায় বসে পড়েন।
কিন্তু ভারতীয় সময় রাত সাড়ে ৮ টা নাগাদ তাদের ঘিরে ফেলে দিল্লি পুলিশ। তাদের উঠে যেতে বারবার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন যে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না করে তারা যাবেন না। এর পরই রাত ন’টা নাগাদ পুলিশ তাদের ধাক্কা দিয়ে কৃষিভবন থেকে বের করে দেন। তৃণমূলের কোনও সাংসদকে ধাক্কা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ, কাউকে আবার চ্যাংদোলা করে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়েছে বলে অসন্তোষ জানিয়েছে তৃণমূল।
কৃষি ভবনের পিছনের গেট থেকে বের করে তৃণমূল সাংসদদের পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মৌসম নূর সহ সাংসদদের আটক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আটক করা হয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও প্রতি মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে।
পরে দ্য ওয়াল সংবাদ মাধ্যমকে তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "গণতন্ত্রের জন্য এদিন লজ্জার। কেন্দ্রের মন্ত্রী সাংসদদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন না। তারা ভয় পেলেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় এই অমাবস্যা আগে দেখা যায়নি।"