অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতে জাতি জনগণনা এবং ওবিসি মহিলাদের সংরক্ষণ নিয়ে সরব রাহুল গান্ধী


কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি

ভারতে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট ও আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন আসন্ন। তার আগে জাতি গণনার দাবি নিয়ে মোদী সরকারের উপর আরও চাপ তৈরির কৌশল নিল কংগ্রেস।

বৃহস্পতিবার ২১ সেপ্টেম্বর সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হয়েছে। তার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সময় সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, "মোদী সরকার মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে। এই মহিলা সংরক্ষণ আইন আগামী দশ বছরেও বাস্তবায়িত হবে না। এই বিলের ফলে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি তথা ওবিসি মহিলাদের কোনও উপকার হবে না। সুতরাং এক, মহিলা সংরক্ষণের মধ্যেই ওবিসি মহিলাদের সংরক্ষণ দেওয়া হোক এবং দুই, এই আইন এখনই বাস্তবায়িত হোক।"

রাহুল এদিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজে ওবিসি। বিজেপি ওবিসিদের ক্ষমতায়ণের উপর অতীতেও বড় বড় কথা বলেছে। কিন্তু বাস্তব হল, ওবিসিদের আর্থ সামাজিক উন্নতি ও ক্ষমতায়ণের উদ্দেশে সরকার কিছু করেনি। রাহুলের বক্তব্য, "ওবিসিদের আর্থ সামাজিক উন্নতি করতে গেলে আগে খুঁজে বের করতে হবে যে দেশে তাদের প্রকৃত জনসংখ্যা কত? সেই জন্য জাতিগত জনগণনার প্রয়োজন। তাই আমাদের দাবি, এর আগে যে জনগণনা হয়েছিল, তার ভিত্তিতে ওবিসিদের সংখ্যা কত ছিল তা প্রকাশ করা হোক। এবং নতুন করে জাতিগত জনগণনা শুরু হোক।

তাৎপর্যপূর্ণ হল, সামাজিক কারিগরীর মাধ্যমে উত্তর প্রদেশ সহ হিন্দি বলয়ে ওবিসি ভোট ব্যাঙ্কে বিজেপি ক্রমশই আধিপত্য বিস্তার করেছে। তার ফল তৎক্ষনাৎ পেয়েছে বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, লোকসভা ভোট এবং রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, ছত্তীসগড়ে বিধানসভা ভোটের আগে সেই মিথটাই ভেঙে দিতে চাইছেন রাহুল। ওবিসিদের একভাবে কংগ্রেসের প্র‍তি আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন তিনি।

রাহুল এর আগে এই প্রসঙ্গে বলেন, "কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারে ৯০ জন সচিব রয়েছেন। তাদের মধ্যে মাত্র ৩ জন হলেন ওবিসি। অর্থাৎ সরকার চালানোয় ওবিসিদের অংশীদারিত্ব মাত্র ৫ শতাংশ। সরকারের মোট বাজেটের মাত্র আড়াই শতাংশ বাস্তবায়ণের অধিকার শুধু ওবিসিদের রয়েছে। সরকার কি সত্যিই মনে করে যে দেশে ওবিসিদের সংখ্যা মাত্র ৫ শতাংশ?"

এদিকে সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হওয়ার পর বিজেপিও ইতিমধ্যে রাজনৈতিক কৃতিত্ব নিতে নেমে পড়েছে। শুক্রবার সকালে বিজেপির মহিলা নেত্রীদের বৈঠকে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, একমাত্র স্থির ও একক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকারই যে এই ধরনের বলিষ্ঠ পদক্ষেপ করতে পারে, তা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে।

কিন্তু রাহুল গান্ধী এদিন বলেন, "দেশে জনগণনা কবে হবে স্থির নেই। সেই জনগণনা হলে তার ভিত্তিতে লোকসভার আসনের পুনর্বিন্যাস হবে। যা করতে আরও অন্তত তিন থেকে চার বছর সময় লাগবে। অর্থাৎ মোদীর কথা শুনলে, আরও দশ বছরের আগে সংসদে মহিলা সংরক্ষণ চালু হবে না। এটা স্রেফ মানুষকে বোকা বানানো। মহিলাদের প্রকৃত ক্ষমতায়ণ চাইলে এই লোক ঠকানো বন্ধ হোক।"

XS
SM
MD
LG