ভারতের সংসদে এখন চলছে কেন্দ্রের ডাকে বিশেষ অধিবেশন। শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর সংসদের নিম্ন কক্ষ লোকসভায় বিতর্কে অংশ নিয়ে এদিন বিজেপি সাংসদ রমেশ বিদুরী, বহুজন সমাজবাদী পার্টি সাংসদ দানিশ আলির উদ্দেশে কখনও মুল্লা, কখনও আতঙ্কবাদী, কখনও উগ্রবাদী বলে মন্তব্য করতে থাকেন। সেই সঙ্গে আরও বেশ কিছু অমুদ্রণীয় বিশেষণও ব্যবহার করেন। নতুন সংসদ ভবন চালু হওয়ার পর শাসক দলের সাংসদের মুখে যে কথা লোকসভায় শোনা গেল তা পার্লামেন্টের গরিমার উপরেও আঘাত বলছেন বিরোধীরা।
রমেশ বিদুরি যখন এই কথাগুলি বলছেন, তখন দেখা যায় তার পাশে ও পিছনে বসে হাসছেন বিজেপির প্রাক্তন দুই মন্ত্রী হর্ষবর্ধন ও রবিশঙ্কর প্রসাদ। এ ঘটনায় তারাও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এদিন বলেন, "হর্ষবর্ধন ও রবিশঙ্করের ভূমিকা আরও হতাশাজনক। এর অর্থ ঘৃণার রাজনীতি ছড়ানো ওদের অ্যাজেন্ডাতেই রয়েছে।"
বিষয়টি স্পিকার ওম বিড়লার নজরে আনা হলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি রমেশের কুকথা লোকসভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বিজেপি সাংসদের ওই মন্তব্যের জন্য সভায় দাঁড়িয়ে ক্ষমা চান।
কিন্তু বিএসপি সাংসদ দানিশের দাবি, এভাবে দায়সারা দুঃখপ্রকাশ করলে হবে না। দানিশ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে রমেশ বিদুরির সাসপেনশন দাবি করেছেন। আলি চান তার অভিযোগটি সংসদের প্রিভিলেজ কমিটিতে পাঠানো হোক।
উল্লেখ্য রাজনৈতিক মহলে রমেশ বিদুরী বরাবরই আগ্রাসী। লোকসভায় তার আচরণ নিয়ে অতীতে বারবার বিরোধীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অসংসদীয়, অপমানজনক এবং বিভেদ সৃষ্টিকারী মন্তব্যের জন্য তিনি এবারও ক্ষমা চাননি।
বিএসপি-র মুসলিম সাংসদকে উগ্রপন্থী, আতঙ্কবাদী বলে বিজেপি সাংসদ আক্রমণ করায় নিন্দায় মুখর হয়েছেন ইন্ডিয়া জোটের নেতারা।
তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্র বলেছেন, “মুসলিম, ওবিসিদের অসম্মান করা বিজেপি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। ওই দলের বেশিরভাগই এখন এতে দোষের কিছু দেখেন না।" আবার ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রধান ফারুক আবদুল্লাহ কথায়, “এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট বিজেপি মুসলিমদের কী চোখে দেখে”।
বিজেপির দিল্লির সাংসদ রমেশ বিদুরী বিজেপিতে আসার আগে আরএসএসের প্রচারক ছিলেন। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবতের উদ্দেশে দানিশ আলি এদিন প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেছেন, "আরএসএসের শাখায় কি এসব শেখানো হয়?" তার কথায়, "যে দলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মঞ্চে দাঁড়িয়ে গোলি মারো স্লোগান তোলেন, বুঝতে হবে ঘৃণার রাজনীতি করা তাদের পাঠ্যক্রমেই রয়েছে।"