অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ভারতের সংসদের রাজ্যসভাতেও পাস হল মহিলা সংরক্ষণ বিল


ভারতের সংসদের রাজ্যসভাতেও পাস হল মহিলা সংরক্ষণ বিল।
ভারতের সংসদের রাজ্যসভাতেও পাস হল মহিলা সংরক্ষণ বিল।

বুধবার ২০ সেপ্টেম্বর ভারতের সংসদের লোকসভায় পাস হয়ে গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রস্তাবিত মহিলা সংরক্ষণ বিল। এবার রাজ্যসভাতেও পাস হয়ে গেল সেই বিল বৃহস্পতিবার ২১ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সময় রাত ৯.৪৫ নাগাদ রাজ্যসভায় ধ্বনিভোটে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস হয়ে যায়। বিলের পক্ষে সংসদের উচ্চ কক্ষে ২১৫টি ভোট পড়েছে বলে জানা গেছে। বিপক্ষে ১টিও ভোট পড়েনি

তিন দশকের অপেক্ষার পর বুধবার সংসদের নিম্ন কক্ষ লোকসভায় পাশ হয়ে গিয়েছিল মহিলা সংরক্ষণ বিল। যার অর্থ লোকসভায় এবার ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে মহিলাদের জন্য। যেহেতু এটি সংবিধান বিল, তাই সভার দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। এদিন ভোটাভুটিতে বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন ৪৫৪ জন। বিপক্ষে ভোট দেন মাত্র ২ জন।

তারপর বৃহস্পতিবার রাজ্যসভাতেও ধ্বনিভোটে পাস হয়ে গেল মহিলা সংরক্ষণ বিল। ২৪৫ জন সাংসদের মধ্যে বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ২১৫টি। বিপক্ষে একজনও ভোট দেননি। এবার রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলেই আইনে পরিণত হবে এই বিল।

গতকাল লোকসভায় বিলটির পক্ষে বিরোধী জোটের সমর্থন পাওয়ার পর সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার রাজ্য সভায় বিলটি বিনা বাধায় পাস হয়ে যাওয়ার পরও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। প্রধানমন্ত্রী রাজ্যসভা থেকে এই দিন সংসদের দুই কক্ষেই পাস হয়ে যাওয়ার জন্য সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এর মাধ্যমে ভারতের নারী শক্তি বিশেষ সম্মান পেলেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য এর আগে একাধিকবার সংসদের দুই কক্ষে বিলটি পাস করানোর চেষ্টা হলেও কোনওবারই সাফল্য আসেনি। ১৯৯৬ সালে লোকসভায় প্রথমবার মহিলা সংরক্ষণ বিল পেশ করেছিল এইচ ডি দেবগৌড়া সরকার। সেই থেকে প্রায় ২৭ বছর অতিক্রান্ত। দেবগৌড়া, ইন্দ্রকুমার গুজরাল, অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং মনমোহন সিং জমানায় এই বিল লোকসভায় পেশ ও পাশের বার বার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু অতীতে কোনও সরকারই সফল হয়নি। মনমোহন সিং সরকার ২০১০ সালের ৯ মার্চ রাজ্যসভায় বিলটি পাশ করাতে সফল হয়েছিলেন। কিন্তু লোকসভায় বিলের পক্ষে দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন জোগাড় করতে পারেনি। যা সম্ভব হল এবার।

রাজনৈতিক মহলের মতে ২০১৪ সাল থেকে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে তাতে ৯ বছর আগেই এই বিল পাশ করানো যেত। এ নিয়ে সমালোচনা করেও এই বিলকে সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেস। সমর্থন জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস-ও।

তবে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমের কথায়, "এই বিল হল লোক ঠকানো। এখনই দেশে মহিলা সংরক্ষণ বাস্তবায়িত হবে না। আগে সরকার জনগণনা করবে। কবে সেই জনগণনা হবে তার কোনও ঠিক নেই। তারপর সরকার সেই জনগণনার ভিত্তিতে লোকসভার আসনের ডিলিমিটেশন করবে। তা কবে হবে তাও অনিশ্চিত। তারপর এই সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু হবে। সুতরাং সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য যে শুধুই রাজনৈতিক প্রচারের ফায়দা নেওয়া, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।"

XS
SM
MD
LG