কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয়দের সাবধানে চলাফেরার পরামর্শ দিল ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রক। কানাডা সফরে আগ্রহী ভারতীয়দেরও সতর্ক হতে বলা হয়েছে। সফরের আগে নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে বলা হয়েছে তাদের।
এদিকে, কানাডার সঙ্গে সম্পর্কের দ্রুত অবনতি এবং যুক্তরাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বুধবার ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন। কানাডার সঙ্গে বিবাদকে অন্য দেশগুলির সামনে কী ভাবে তুলে ধরা হবে, ভারতের অবস্থানের পক্ষে প্রভাবশালী দেশগুলিকে সামিল করার কৌশল ইত্যাদি নিয়ে দু’জনের কথা হয় বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করা করছেন। এই বৈঠকের পরই পররাষ্ট্রমন্ত্রক কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয়দের সাবধান করে বার্তা জারি করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রকের বুধবারের জারি করা এই পরামর্শে চিন্তায় পড়েছেন সে দেশে পড়তে যাওয়া আড়াই লাখ ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রী এবং প্রায় সাড়ে সাত লাখ অনাবাসী ভারতীয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রক বলেছে, কানাডায় ভারতীয় দূতাবাস, দূতাবাস কর্মী এবং খালিস্তান বিরোধীদের উপর হামলার বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি। সে দেশে থাকা ভারতীয়দের হামলার ঘটনা হয়েছে এমন কিছু জায়গার নামও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, তারা যেন দূতাবাস এবং কনস্যুলেট অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন।
কূটনৈতিক মহল মনে করছে, কানাডা হঠাৎ করেই পাকিস্তানের মতো আচরণ করা শুরু করেছে। গত সোমবার তারা ভারতীয় দূতাবাসের এক কর্মীকে বহিষ্কার করে। পাকিস্তানের কায়দায় মঙ্গলবার জাস্টিন ট্রুডোর প্রশাসন তাদের দেশের নাগরিকদের ভারতের জন্মু-কাশ্মীর ভ্রমণ নিয়ে সতর্ক করে বলেছে ওখানে যেতে সাবধান।
খালিস্তানিদের বাড়বাড়ন্তর ইস্যুতে কানাডা সরকারের হঠাৎ করে কাশ্মীরকে টেনে আনার সিদ্ধান্তে কূটনৈতিক মহল অবাক হয়ে গেছে। কূটনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, খালিস্তান ইস্যুতে ভারতের আপত্তি নিয়ে কানাডা ঘৃণ্য কূটনীতি করতে চাইছে। সে দেশে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্সির যোগ থাকার অভিযোগ করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো তার দেশে বসবাসকারী খালিস্তান বিরোধী দেশপ্রেমিক ভারতীয়দের জীবন বিপন্ন করে তুলেছেন বলে নয়া দিল্লির পররাষ্ট্রমন্ত্রক মনে করছে।
কানাডার অভিযোগ নয়া দিল্লি নসাৎ করলেও কূটনৈতিক মহল মনে করছে, গোটা বিশ্বের কাছেই ভারতকে খানিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হল। অভিযোগটি গুরুতর এবং অতীতে পাকিস্তান ছাড়া ভারতের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ কোনও দেশ তোলেনি। ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রর কানাডার অভিযোগ নিয়ে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া নয়া দিল্লিকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র বলেছেন, কানাডার প্রেসিডেন্টের অভিযোগটি গুরুতর। ভারতের উচিৎ খুনের তদন্তে সহযোগিতা করা। প্রসঙ্গত, খুন হওয়া খালিস্তানি নেতা কানাডার নাগরিক। ট্রুডো বলেছেন, তার দেশে তারই নাগরিককে খুন সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ।