দিল্লিতে ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর সদ্য অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলন সফল হয়েছে বলে বিবৃতি দিয়েছে চীনের বিদেশ মন্ত্রক। যদিও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিন-এর সম্মেলনে যোগদান না করা ছিল অন্যতম চর্চার বিষয়। সম্মেলনে চীনের প্রতিনিধিত্ব করেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং। সম্মেলনের আলোচনার বাইরে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং সৌদি আরবের মধ্যে এশিয়া-ইউরোপ করিড়র চালু করা নিয়ে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা নিয়ে চীনের অসন্তোষ রয়েছে। তবে গোটা সম্মেলনে চীনের আচরণ সংযত ছিল বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
কিন্তু সম্মেলনের বাইরে চীনের প্রতিনিধিদের একাংশ ভারতীয় কর্মকর্তাদের যথেষ্ট সমস্যায় ফেলেছেন বলে সংবাদ সূত্রে খবর। দিল্লির যে পাঁচতারা হোটেলে চীনের প্রতিনিধিরা উঠেছিলেন সেখানে রীতিমতো নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত, চীনের এক প্রতিনিধির ব্যাগ ঘিরে। হোটেলে চেক ইন করার সময়ই ব্যাগের আকৃতি দেখে সন্দেহ হয়েছিল নিরাপত্তা কর্মীদের। কিন্তু কূটনৈতিক সৌজন্যের কারণে তারা ব্যাগ নিয়ে কথা বাড়াননি। এই ঘটনা গত বৃহস্পতিবার ৭ সেপ্টেম্বরের।
সমস্যা দেখা দেয় পরদিন শুক্রবার ৮ সেপ্টেম্বর। হোটেলের কর্মীরা হোটেলের ঘর পরিস্কার করতে গিয়ে লক্ষ্য করেন, সেই ব্যাগে কিছু রহস্যজনক যন্ত্র রয়েছে, যেগুলি আগে তারা কখনও দেখেননি। তাছাড়া, চীনের বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিকের ব্যাগে যন্ত্রপাতি কেন, এই প্রশ্নের উত্তর সন্ধানে হোটেল কর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানান। খবর যায় দিল্লি পুলিশ-সহ ভারতের নিরাপত্তা এজেন্সিগুলির কাছে। দ্রুত ছুটে আসেন নিরাপত্তা আধিকারিকেরা।
কিন্তু বেঁকে বসেন চীনের সেই কূটনীতিক। তিনি কূটনৈতিক সুরক্ষার কথা বলে ব্যাগ তল্লাশিতে আপত্তি তোলেন। একটা সময় ঘরের দরজা বন্ধ করে ভিতরে বসে থাকেন। এইভাবে ১২ ঘণ্টা কেটে যায়। চীনের কূটনীতিকের ঘরের সামনে অপেক্ষায় থাকেন ভারতের নিরাপত্তা আধিকারিকেরা। তারাও ব্যাগ পরীক্ষার জন্য নানা ধরনের যন্ত্রপাতি সহ হাজির হন।
খবর পেয়ে ছুটে আসেন দিল্লির চীনা দূতাবাসের অফিসারেরাও। হোটেলে আটকে পড়েন চীনের অন্য আধিকারিকেরাও। একই হোটেলে রাখা হয়েছিল ব্রাজিলের প্রতিনিধিদেরও। সূত্রের খবর, চীনা দূতাবাসও দাবি করে কূটনৈতিক সৌজন্য ও সুরক্ষা অনুযায়ী ব্যাগ তল্লাশি করা যাবে না।
দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর অবশ্য ঠিক হয়, চীনের কূটনীতিকের ওই ব্যাগ দিল্লির চীনা দূতাবাসে পাঠানো হবে। ব্যাগ তল্লাশি করতে না দিলে সেটি ওই কূটনীতিককে আর বহন করতে দেওয়া হবে না। ফলে অজানাই থেকে গিয়েছে, চীনা কূটনীতিকের ব্যাগে রহস্যময় যন্ত্রপাতি কী ছিল।