ভারতে মিডিয়া ট্রায়াল তথা সংবাদমাধ্যমে পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন বন্ধ করতে কড়া অবস্থান নিল দেশের শীর্ষ আদালত। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের মতে, পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদনের কারণে সাধারণ মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। অভিযুক্তকে একপ্রকার অপরাধী বলে প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। তা বন্ধ করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে তিন মাসের মধ্যে গাইডলাইন তৈরি করার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। পুলিশকে সেই গাইডলাইন মেনে অপরাধমূলক ঘটনার ব্রিফিং করতে হবে।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ আরও নির্দেশ দিয়েছে, এ ব্যাপারে সব রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ কর্তা ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকেও তাদের সুপারিশ পেশ করতে হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে সুপারিশ করবেন তারা।
ভারতের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, মিডিয়া ট্রায়ালের কারণে বিচারের কাজ ব্যহত হচ্ছে। ফলে কোন পরিস্থিতিতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে তথ্য প্রকাশ করা হবে তা স্থির করার দরকার। সুপ্রিম কোর্টের মতে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, এখানে অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী দুজনের স্বার্থই জড়িয়ে রয়েছে।
শীর্ষ আদালত আরও বলেছে, বাক স্বাধীনতা হল মৌলিক অধিকার। মিডিয়ারও খবর করার বা মতামত জানানোর অধিকার রয়েছে। কিন্তু মিডিয়া ট্রায়াল চলতে দেওয়া যায় না। তদন্ত চলাকালীন যদি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও প্রমাণ ফাঁস হয়ে যায় তাহলে সেই তদন্তেরও ব্যঘাত ঘটতে পারে।
সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধ করতে যে গাইডলাইন আনা হবে তার খসড়া প্রস্তাব ৬ সপ্তাহের মধ্যে আদালতে পেশ করতে হবে।
এর আগে গত মার্চ মাসে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছিলেন, সাংবাদিকদের আরও দায়িত্বশীল হয়ে সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। তথ্য যেন সঠিক হয় এবং প্রতিবেদনের নিরপেক্ষতা যেন বজায় থাকে। কোনও বক্তৃতার বা নির্দেশের নির্বাচিত অংশ প্রকাশ করে উত্তেজনা ছড়ানোর প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। তিনি এও বলেছিলেন, বিশেষ করে বিচারপতিদের সিদ্ধান্ত তথা রায় অনেক জটিল। তাতে অনেক স্তর থাকে। তাই নির্বাচিত অংশ প্রকাশ করলে প্রকৃত রায়ের থেকে পৃথক ধারণা তৈরি হতে পারে।