ভারতে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে সংসদের আসন্ন বিশেষ অধিবেশনে কী কী বিষয়ে সরকার আলোচনায় ইচ্ছুক, বিরোধী কোনও কোন ইস্যু উত্থাপনে আগ্রহী, এই সব বিষয়ে আলোচনার জন্য আগামী, রবিবার ১৭ সেপ্টেম্বর সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল কেন্দ্রীয় সরকার। সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর জানিয়েছেন, ১৭ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে চারটায় বৈঠক হবে।
সদ্য মাস খানেক আগে সংসদের বাদল অধিবেশন শেষ হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, লোকসভা ভোটের আগে আসন্ন অধিবেশন থেকে কোনও বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে মোদী সরকার। যে প্রস্তাবই আনা হোক না কেন তার মূল উদ্দেশ্য থাকবে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। তার কারণ, গত পাঁচ বছরে বর্তমান সরকারের সাফল্যের বিষয় খুব বেশি নেই। কোভিড দুটো বছর গ্রাস করে নিয়েছিল। এ বছরও বর্ষা আশানুরুপ হয়নি। ফলে সরকার এখন মূল বিষয় থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে, মত পর্যবেক্ষকদের।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের অবশ্য ধারণা, 'এক দেশ-এক ভোট' নিয়ে আলোচনা হবে। কেউ মনে করছেন ভারত ও ইন্ডিয়া নিয়ে বিতর্ক চায় সরকার। আবার মহিলা সংরক্ষণ-সহ একাধিক বকেয়া বিল পাশ করানোর সম্ভাবনা নিয়েও জল্পনা আছে। তবে বিরোধী নেতাদের অনেকেই মনে করছেন, কোনও বিল হয়তো আসতে পারে। এমনকী সরকার বড় কোনও সিদ্ধান্তও লোকসভা ভোটের আগে সংসদে ঘোষণা করতে পারে। তবে মূল উদ্দেশ্য চন্দ্রযানের চাঁদে সফল অবতরণ, জি-২০ সম্মেলন ইত্যাদি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আত্মপ্রচার করতেই সরকার এই অধিবেশন ডেকেছে বলেই মনে করছেন বিরোধীরা।
সরকারের কৌশল আন্দাজ করে বিরোধীরাও পাল্টা কৌশলী হচ্ছে। কংগ্রেস স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছে যে সংসদের অধিবেশনে তারা আদানি ইস্যুতে তদন্তের জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি জানাবে। কংগ্রেস নেতারা ধরেই নিয়েছেন যে সরকার এই দাবি মানবে না। সরকার তাদের দাবি না মানলে সেই ইস্যুতেই সংসদ অচল করে দেওয়ার চেষ্টা করবে কংগ্রেস।
শুধু কংগ্রেস নয় কেন্দ্র বিরোধী ২৮টি রাজনৈতিক দল সমষ্টিগত ভাবে কৌশল নির্ধারণও করতে চাইছে। বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বিরোধী জোটের সমন্বয় কমিটির বৈঠক রয়েছে। তবে সংসদের বিশেষ অধিবেশনের আগে বিরোধী পার্টিগুলির সংসদীয় নেতারা ফের বৈঠকে বসবেন। সংসদে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারাও।
গত সপ্তাহে কংগ্রেস সভাপতি নেত্রী সনিয়া গান্ধী প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে সংসদের আসন্ন অধিবেশনে চীন সীমান্ত, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, মণিপুর পরিস্থিতি-সহ নয়টি বিষয়ে আলোচনা চেয়েছিলেন। জবাবে সরকারের তরফে জানানো হয় এই ব্যাপারে যথাসময়ে সরকারের বক্তব্য ঘোষণা করা হবে।
বৈঠকের সভাপতিত্ব কে করবেন সে বিষয়ে সংসদীয় মন্ত্রী কিছু জানাননি। তবে নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সংসদ অধিবেশন নিয়ে একটিও সর্বদলীয় বৈঠকে হাজির হননি। ইদানীং এই বৈঠকে সরকারের তরফে পৌরহিত্য করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং কিংবা বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল।