আগামী বছর ২০২৪-এর ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিয়ো কিসিন্দা এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনী আল্বনীসকে অথিতি করতে চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ভারত এবং এই তিন দেশ হল নিরাপত্তা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মঞ্চ কোয়াড্রিল্যাটরাল সিকিউরিটি ডায়লগ বা চতুর্পাক্ষিক নিরাপত্তা সংলাপের সদস্য। কোয়াড হিসাবেই পরিচিত চার দেশের এই নিরাপত্তা মঞ্চ। মূলত ভারত মহাসাগর এলাকায় চীনের সামরিক আধিপত্য খর্ব করতেই সামরিক দিক থেকে শক্তিশালী চার দেশ এই মঞ্চ গড়ে তোলে।
কূটনৈতিক মহলের খবর, জি-২০ সম্মেলনে এই তিন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরাই উপস্থিত থাকছেন ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। সেই সময় বাইডেন, কিসিন্দা এবং আল্বনীসকে আগামী প্রজাতন্ত্র দিবসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানাতে চান প্রধানমন্ত্রী মোদী। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত দুটি কারণে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক মহল।
এক - কোয়াড তৈরির অন্যতম কারিগর ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। ২০০৭ সালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, যুক্তরাষ্ট্রের উপ-রাষ্ট্রপতি ডিক চেনি, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জন হাওয়ার্ড-এর সঙ্গে আলোচনা করে মনমোহন সিংহ কোয়াড তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা নেন। সেই থেকে এই তিন দেশের সঙ্গে ভারতের যৌথ সামরিক মহড়া চলছে।
দুই - ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে সাধারণত একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে নিমন্ত্রণ করা হয় বিশেষ অতিথি হিসাবে। প্রধানমন্ত্রী মোদী সেই ধারাতেও পরিবর্তন আনতে চাইছেন।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের সময় দেশে লোকসভা ভোটের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলবে। সেই ভোটের আবহে চীন বিরোধী বিশ্বের অন্যতম প্রধান তিন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে হাজির করে বিরোধীদের জবাব দিতে চান প্রধানমন্ত্রী।
তবে জানুয়ারি মাসের ওই সময়টি তিন রাষ্ট্রপ্রধানের জন্যই অত্যন্ত ব্যস্ততার সময়। আগামী বছরের শেষে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ভোটের মুখোমুখি হতে হবে। সেই মতো জানুয়ারিতেই তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সংসদে ভাষণ দিতে হবে। অস্ট্রেলিয়া আবার ২৬ জানুয়ারি জাতীয় দিবস পালন করে। এমন দিনে প্রধানমন্ত্রীর দেশের বাইরে থাকা, বিশেষত অন্য দেশের প্রজাতন্ত্র তথা গণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে হাজির থাকা কঠিন হতে পারে। অন্যদিকে, জাপানের প্রধানমন্ত্রীর তখন ব্যস্ত থাকার কথা বাজেট নিয়ে।