অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

পাকিস্তানে ভারতীয় হাই কমিশনের নেতৃত্বে প্রথমবার নিযুক্ত একজন মহিলা কূটনীতিবিদ


২০০৫ ব্যাচের ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস অফিসার গীতিকা শ্রীবাস্তব ইসলামাবাদে ভারতের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স হতে চলেছেন।
২০০৫ ব্যাচের ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস অফিসার গীতিকা শ্রীবাস্তব ইসলামাবাদে ভারতের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স হতে চলেছেন।

প্রথমবারের জন্য পাকিস্তানে ভারতীয় মিশনের নেতৃত্ব দিতে চলেছেন একজন মহিলা কূটনীতিক। ২০০৫ ব্যাচের ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস অফিসার গীতিকা শ্রীবাস্তব ইসলামাবাদে ভারতের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স হতে চলেছেন। এতদিন এই পদে নিযুক্ত ছিলেন এম সুরেশ কুমার। গীতিকা তার জায়গায় দায়িত্ব গ্রহণ করলে দিল্লিতে ফিরে আসবেন সুরেশ।

নিয়ম অনুসারে ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে পাক দূতাবাসে সে দেশের রাষ্ট্রদূতের থাকার কথা, যাকে বলা হয় অ্যাম্বাসেডর। একইভাবে ইসলামাবাদেও ভারতের রাষ্ট্রদূতের থাকার কথা। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের শৈত্যের কারণে ভারত যেমন পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে তার দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে, তেমনই ইসলামাবাদও ভারতের রাষ্ট্রদূতকে ফেরত পাঠিয়ে দেয় নয়া দিল্লিতে। ফলে দুই দেশেই হাই কমিশনের দায়িত্বে রয়েছেন একজন চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স। সেখানে কোনও হাই কমিশনার নেই। সর্বোচ্চ র‍্যাঙ্কের কূটনীতিক হলেন এই সিডিএ। যিনি একজন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার অফিসার। ইসলামাবাদে ভারতীয় হাই কমিশনের গীতিকাই হলেন প্রথম মহিলা চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স।

গীতিকা বর্তমানে বিদেশ মন্ত্রকের সদর দফতরে যুগ্ম সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ইন্দো-প্যাসিফিক বিভাগের দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন। বিদেশি ভাষা প্রশিক্ষণের অংশ হিসাবে ম্যান্ডারিন শিখেছিলেন গীতিকা। সেই কারণেই ২০০৭-২০০৯ সাল পর্যন্ত বেজিংয়ে ভারতীয় দূতাবাসে কাজ করেছেন এই আইএফএস অফিসার। তিনি পশ্চিমবঙ্গে কলকাতার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এবং বিদেশ মন্ত্রকে ভারত মহাসাগর অঞ্চল বিভাগের পরিচালক হিসাবেও কাজ করেছেন।

১৯৪৭ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানে ভারতীয় হাই কমিশনার হিসেবে কোনও মহিলাকে দায়িত্ব দেয়নি ভারত। সেই রেকর্ড ভাঙলেন গীতিকা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শ্রী প্রকাশকে তৎকালীন পাকিস্তানে ভারতীয় হাই কমিশনার হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। সেই সময় সর্বোচ্চ সংখ্যক পুরুষ কূটনীতিকরা ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তখন ২২ জন মিশন প্রধান ছিলেন, এবং প্রত্যেকেই পুরুষ।

ইসলামাবাদে শেষ ভারতীয় হাই কমিশনার ছিলেন অজয় বিসারিয়া। ২০১৯ সালে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করার পরে পাকিস্তান ভারতীয় হাই কমিশনের মর্যাদা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তার পরেই তাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।

এর আগেও পাকিস্তানে ভারত থেকে মহিলা কূটনীতিকদের পাঠানো হয়েছে। তবে তারা কেউই সর্বোচ্চ পদে কাজ করেননি। এছাড়া কয়েক বছর আগে ইসলামাবাদের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, পাকিস্তানে কর্মরত বিদেশী কূটনীতিকরা পরিবার নিয়ে সেখানে থাকতে পারবেন না। সেই কারণে মহিলা কূটনীতিবিদরা পাকিস্তানে গিয়ে কাজ করার দায়িত্ব নিতে চাইতেন না। বর্তমানে পাকিস্তানে ভারতীয় হাই কমিশনে প্রথম সচিব পর্যায়ে একজন নারী কূটনীতিক রয়েছেন। প্রশাসনিক পর্যায়ে আশা করা হচ্ছে, গীতিকা শিগগিরই পাকিস্তানে গিয়ে তার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানও নয়াদিল্লিতে একজন নতুন সিডিএ নিয়োগ করেছে। সাদ আহমেদ ওয়ারাইচ, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী মিশনে কর্মরত একজন কূটনীতিক, তিনি সলমান শরিফের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। সলমন গত মাসে ভারত ছেড়ে ইসলামাবাদে ফিরে গেছেন।

XS
SM
MD
LG