বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রথমবার সফল অভিযান করেছে ভারত। ২৪ অগাস্ট সেখানে অবতারণ করেছে তার চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান। পৃথিবীর সময়ের হিসেবে চাঁদে ১৪ দিন কাজ করবে তারা। পৃথিবীর ১৪ দিন চাঁদের হিসেবে একদিন। এই সময়টাতে চাঁদে সূর্যের আলো থাকবে। রোভার আর বিক্রম তাদের সোলার প্যানেলে সূর্যের আলো থেকে এনার্জি বুস্ট করে সক্রিয় থাকবে।
ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানাচ্ছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যতক্ষণ দিন থাকবে ততক্ষণ সূর্যের আলো থেকে শক্তি নিয়ে কাজ শুরু করবে রোভার প্রজ্ঞান। যতক্ষণ সূর্যের আলো থাকবে ততক্ষণই সচল থাকবে প্রজ্ঞান। চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করবে। তেজস্ক্রিয় মৌলের খোঁজ করবে, জলের অস্তিত্ব খুঁজবে। কিন্তু সূর্যের আলো চলে গেলে আর কাজ করতে পারবে না রোভার। তখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে।
পৃথিবীর সময়ের হিসেবে ১৪ দিন পরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে রাত নামবে। সূর্যের আলো আর থাকবে না। হিমশীতল ঠান্ডা গ্রাস করবে চাঁদের দক্ষিণ পিঠকে। এই সময় বিক্রম ও রোভার দু’জনেই নিষ্ক্রিয় অবস্থায় চলে যাবে। এই সময়টা আরও ১৪ দিন ধরে চলবে। ওই ১৪ দিন রোভার আর বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে না।
ইসরো-র বিজ্ঞানীরা বলছেন বিক্রম-প্রজ্ঞানের মৃত্যু হবে না। ১৪ দিন পরে আবার যখন সূর্যের ক্ষীণ আলোর রশ্মি দক্ষিণ পিঠে আসবে তখন আবার জেগে উঠবে তারা। এখানেই ইসরোর বড় সাফল্য। এমনভাবেই বিক্রম আর প্রজ্ঞানের যন্ত্রপাতি তৈরি হয়েছে, এতটাই আধুনিক পদ্ধতিতে গড়েছেন বিজ্ঞানীরা যে ১৪ দিন নিষ্ক্রিয় থাকার পরেও নিজে থেকেই জেগে উঠবে তারা।
তাদের পৃথিবীতে ফিরে আসা প্রসঙ্গে অবশ্য বিজ্ঞানীরা বলছেন, সে সম্ভাবনা কম। চাঁদ থেকে আর ফিরবে না বিক্রম ও প্রজ্ঞান। চাঁদের মাটিতেই থেকে যাবে তারা।
ইসরো জানিয়েছে, প্রজ্ঞান এবার তার কাজ শুরুর আগে অবতরণস্থলের চারদিক ভাল করে পরীক্ষা করে নিয়েছে এই রোভার-এর রেডার ও সেন্সর। আশপাশে কোনও গহ্বর আছে কিনা, বিপদের সম্ভাবনা আছে কিনা তা বার বার পরীক্ষা করার পরেই চাঁদের মাটি সংগ্রহের কাজ শুরু হবে।
চাঁদের ধুলো রেগোলিথ থেকে বাঁচাতে প্রজ্ঞানকে সুরক্ষা দিচ্ছে ইসরো। বিক্রম ও প্রজ্ঞানের গায়ে যাতে ধুলো লেগে না থাকে তা দেখা হচ্ছে।