২০০৪ সালের ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ঠিক এক বছর আগে কেন্দ্রে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল কংগ্রেস ও বামেরা। বর্তমানে ভারতের সংসদে কুড়ি বছর আগের স্মৃতি যেন ফিরছে। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা ভাবছে বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া'।
মণিপুর ইস্যুতে সংসদের দুই কক্ষেই অচলাবস্থা চলছে। এরই মধ্যে এনডিএ-র সংসদীয় দলের বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তিনি বলেন, "এখন সূর্যোদয়ের ঠিক আগের সময়। এক বছর বাদে লোকসভা ভোট। তাই ঘুম থেকে উঠে নতুন করে প্রস্তুতি শুরু করে দিন।"
অন্যদিকে সংসদে পাল্টা বৈঠকে বসেছিলেন ২৬টি বিরোধী দলের নেতারাও। সংবাদ সূত্রের মতে, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার ব্যাপারে ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তবে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।
পর্যবেক্ষকদের মতে, লোকসভায় বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও মোদী সরকারের বিচলিত হওয়ার কারণ নেই। কারণ, লোকসভায় বিজেপির একারই সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। কিন্তু অনাস্থা প্রস্তাব আনার অর্থ হল, সব বিরোধী দল কেন্দ্রে বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে সংসদে মুখ খোলার সুযোগ পাবে। তারা দেখাতে পারবে মোদীর বিরুদ্ধে এককাট্টা ‘ইন্ডিয়া’। আবার সেই সব অভিযোগের জবাবও দিতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।
২০০৩ সালে সনিয়া গান্ধী যখন বাজপেয়ী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন, তখন সংখ্যার দিক থেকে কংগ্রেস ছিল দুর্বল। তুলনায় অনেকটাই সবল ছিল এনডিএ জোট। কিন্তু সেই অনাস্থা প্রস্তাবকে সামনে রেখে সনিয়া সর্বভারতীয় স্তরে বিরোধী জোট তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন।
বিজেপি সেই জোটকে শুরুতে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি। বরং বেঙ্কাইয়া নায়ডুরা বাজপেয়ীকে 'বিকাশ পুরুষ' আর লালকৃষ্ণ আডবাণীকে 'লৌহ পুরুষ' আখ্যা দিয়ে ‘ভারত উদয়’ যাত্রায় সওয়ার ছিলেন। কিন্তু ভোটের ফলাফলে পর্যুদস্ত হয়েছিল বিজেপি ও এনডিএ।