পাকিস্তান শনিবার বলেছে, ভারতের "বিনা উস্কানী"তে আন্তঃসীমান্ত গোলাবর্ষণে বিতর্কিত কাশ্মীর অঞ্চলের পাকিস্তান-শাসিত অংশের ভিতরে কমপক্ষে দু'জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং অন্য একজন "গুরুতর" আহত হয়েছে।
পরমাণু-শক্তিধর প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণ এশীয় দেশগুলি তাদের ডি ফ্যাক্টো কাশ্মীর সীমান্ত, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ২০০৩ সালের যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি মেনে চলতে সম্মত হওয়ার দুই বছরেরও বেশি সময় পর কথিত এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটলো।
পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী শনিবার "সাটওয়াল সেক্টরে রাখালদের একটি দলের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়", যার ফলে দুই জন বেসামরিক লোক মারা যায় এবং অন্য একজন "গুরুতর" আহত হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রক পরে বলেছে, ইসলামাবাদ "যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের তীব্র প্রতিবাদ" করতে এবং বেসামরিক নাগরিকদের "নিন্দনীয়ভাবে" লক্ষ্যবস্তু করার ব্যাপারে নিন্দা জানাতে, ভারতীয় চার্জ ডি'অ্যাফেয়ার্সকে তলব করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ভারতীয় পক্ষকে প্রাণঘাতী ঘটনার তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে এবং জোর দিয়ে বলেছে যে, "এই ধরনের বিবেকহীন কাজগুলি যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন"।
তবে, এই অভিযোগের বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি-তে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে, ভারতীয় ও পাকিস্তানি সৈন্যদের মধ্যে প্রায় প্রতিদিনের সংঘর্ষ থেমে যায়। এর আগে, শুধুমাত্র ২০২০ সালে সংঘর্ষে ৭০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছিল।
কাশ্মীরের হিমালয় অঞ্চল পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে বিভক্ত। উভয় দেশই ওই অঞ্চলকে পুরোপুরি তাদের নিজেদের বলে দাবি করে এবং ১৯৪৭ সালে উপনিবেশ দুটি ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এই অঞ্চলকে নিয়ে দুবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে।
এদিকে, হোয়াইট হাউজে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আলোচনার পর, বৃহস্পতিবার জারি করা একটি যৌথ বিবৃতিতে, পাকিস্তানকে তার ভূখণ্ড জঙ্গি হামলার ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার না করার বিষয়ে নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র-ভারত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "তারা (বাইডেন এবং মোদি) আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ, সন্ত্রাসী প্রক্সি ব্যবহার করার তীব্র নিন্দা করেছেন, এবং পাকিস্তানকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো অঞ্চল সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য ব্যবহার করা না হয়"।
তবে, শুক্রবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রক, এক আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায়, যৌথ ওই বিবৃতিকে "অযাচিত, একতরফা এবং বিভ্রান্তিকর" বলে অভিহিত করেছে। ইসলামাবাদের ভাষায় তা ছিল "রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত" এবং "কূটনৈতিক নিয়মের পরিপন্থী"।