অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল শুক্রবার জানিয়েছে, ইরানে মাদক সংশ্লিষ্ট অভিযোগে ২০২২ সালের তুলনায় এ বছর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে। তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে এই ধরনের ফাঁসি 'নির্লজ্জ' হারে ঘটছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হওয়া বিক্ষোভ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত মামলায় ইরান সাতজনকে ফাঁসি দিয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সবধরনের অভিযোগে বিশেষত মাদক সংক্রান্ত অভিযোগে ফাঁসি দেওয়া বেড়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, মাদক সম্পর্কিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত কমপক্ষে ১৭৩ জনকে "পদ্ধতিগতভাবে অন্যায্য বিচারের পরে" এ বছর ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।তারা আরও বলছে,গত বছর এই সময়ের তুলনায় এ বছর এই সংখ্যাটি প্রায় তিনগুণ বেশি।
অ্যামনেস্টি বলেছে, ২০২৩ সালের প্রথম পাঁচ মাসে ইরানে যত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে তার দুই-তৃতীয়াংশই ছিল এ ধরনের মৃত্যুদণ্ড যা মূলত প্রান্তিক ও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ওপর প্রভাব ফেলছে।
এতে বলা হয়, ইরানের জনসংখ্যার মাত্র ৫ শতাংশ বালুচ জাতিগোষ্ঠীগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হওয়া সত্ত্বেও ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রায় ২০ শতাংশ এই সম্প্রদায়ের লোকেরা।
২০১৭ সালে ইরানের মাদকবিরোধী আইনে একটি সংশোধনীর মাধ্যমে মাদক সম্পর্কিত অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর সীমিত করার চেষ্টা করার পরে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ইরানে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।
কিন্তু আন্দোলনকারীরা এখন যুক্তি দিচ্ছেন যে ইরানের জনগণের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করার প্রয়াসে সব ধরণের অভিযোগে মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে ইরান কারণ নেতৃত্ব প্রতিবাদ আন্দোলনকে দমন করতে চায়।
জাতিসংঘের মাদকদ্রব্য বিষয়ক কমিশন এবং সদস্য দেশগুলো যারা ইরানে তাদের প্রকল্পে অর্থায়ন করে তারা এখন মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকে নিন্দা জানানোর জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে।
নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ২০২৩ সালে অন্তত ৩০৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে যা গত বছর একই সময়ের তুলনায় ৭৫শতাংশ বেশি। মে মাসে অন্তত ১৪২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে যা ২০১৫ সালের পর একমাসে ছিল সর্বোচ্চ সংখ্যা।
অ্যামনেস্টি বলেছে, কর্তৃপক্ষ যদি এই আশঙ্কাজনক গতিতে সামগ্রিকভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে থাকে তবে তারা এ বছরের শেষ নাগাদ প্রায় এক হাজার বন্দীকে হত্যা করতে পারে।