সংঘাত-বিধ্বস্ত মধ্য সিরিয়ায় মরুভূমিতে ১৫ জন ট্রাফল (ভূগর্ভস্থ ভোজ্য ছত্রাক) শিকারীকে গলা কেটে হত্যা করেছে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী, এছাড়া অন্য আরও ৪০ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। শুক্রবার একটি যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা এ কথা জানিয়েছে।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে, কমপক্ষে ১৫০ জন ট্রাফল শিকারী, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক লোকজন , আইএস হামলায় বা উগ্রবাদীদের পুঁতে রাখা ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে নিহত হয়েছে।
পর্যবেক্ষক সংস্থাটির প্রধান রামি আবদেল রহমান বলেন, "বৃহস্পতিবার ট্রাফল সংগ্রহ করার সময় আইএস যোদ্ধারা সাতজন বেসামরিক নাগরিক এবং আটজন স্থানীয় সরকারপন্থী যোদ্ধাসহ অন্তত ১৫ জনের গলা কেটে হত্যা করে।"
তিনি আরও বলেন, হামা প্রদেশে ওই হামলার পর, এখন পর্যন্ত আরো অন্তত ৪০ জন নিখোঁজ রয়েছে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনার খবর জানায়নি।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে, সিরিয়ার শত শত দরিদ্র নাগরিক সিরিয়ার বিস্তীর্ণ মরুভূমিতে ট্রাফলের সন্ধান করে। বাদিয়া নামের ওই এলাকাটি জিহাদিদের জন্য একটি পরিচিত আস্তানা এবং এলাকাটিতে ল্যান্ডমাইন ছড়ানো ছিঁটানো রয়েছে।
পর্যবেক্ষক সংস্থাটি বলেছে, আইএস দুর্গম স্থানে হামলা চালানোর জন্য বার্ষিক এই ট্রাফল উৎপাদন মৌসুমের সময়টাকে বেছে নিচ্ছে।
ল্যান্ডমাইন এবং আইএস যোদ্ধাদের সম্পর্কে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও, খাদ্য শিকারিরা তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বারবার খাবার সংগ্রহ করতে বের হয়।
সিরিয়ার মরুভূমি বিশ্বের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের ট্রাফল উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত।
মূল্যবান এই ছত্রাকটি প্রতি কিলোগ্রাম ২৫ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২,৬৩০ টাকা) পর্যন্ত বিক্রি হয়, যেখানে গড় মাসিক মজুরি মাত্র ১৮ ডলার (প্রায় ১,৯০০ টাকা)।
এই মাসের শুরুর দিকে, আইএস যোদ্ধারা উত্তর সিরিয়ায় তিনজন ট্রাফল শিকারীকে হত্যা করেছে এবং কমপক্ষে ২৬ জনকে অপহরণ করেছে।
ব্রিটেন-ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাটি জানিয়েছে, ইরানপন্থী বাহিনীর অবস্থানের খুব কাছেই ওই হামলা চালানো হয়েছে।
যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থাটি সেই সময়ে বলেছিল, গত ফেব্রুয়ারিতে মোটরসাইকেল আরোহী আইএস যোদ্ধারা ট্রাফল শিকারীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়, এতে কমপক্ষে ৬৮ জন নিহত হয়।
২০১১ সালের মার্চ মাসে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হলে, বিক্ষোভকারীদের উপর নির্মম দমন-পীড়ন চালায় সিরিয়ার সরকার। সরকার বিরোধী যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ মারা গেছে এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছে আরও লক্ষ লক্ষ মানুষ।