পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে বুধবার ভোরে একটি পুলিশ পরিবহনকারী ট্রাকের ওপর চালানো আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ৪ ব্যক্তি নিহত ও ২৪ জন আহত হয়েছেন। হতাহতদের বেশিরভাগই পুলিশ কর্মকর্তা।
নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) ওরফে পাকিস্তানি তালিবান নামের সংগঠনটি বালুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় সংঘটিত এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে।
শীর্ষ প্রাদেশিক পুলিশ কর্মকর্তা ঘুলাম মেসের সাংবাদিকদের জানান, একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী পুলিশের ট্রাকের সঙ্গে তার অটোরিকশার সংঘর্ষ ঘটায়। পুলিশ বাহিনীর কিছু সদস্য ট্রাকটিতে করে পোলিও ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজে নিয়োজিত মেডিকেল কর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন।
সংঘর্ষের পর একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে, যার দমকে ট্রাকটি সড়কের পাশের একটি খাতে পড়ে যায় এবং আরও ২টি গাড়িকে আঘাত করে। এতে ৪ বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয় বলে নিশ্চিত করেন পুলিশের কর্মকর্তা মেসের। তিনি আরও বলেন, “ঘটনাস্থলের কাছাকাছি জায়গায় আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর মরদেহের অবশিষ্টাংশ পাওয়া গেছে।”
বোমা হামলার ২দিন আগে টিটিপি ঘোষণা দেয়, তারা তাদের যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের প্রতিশোধ নিতে দেশব্যাপী আক্রমণ শুরু করতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে একটি একমুখী ও ভঙ্গুর শান্তি চুক্তির অবসান ঘটায় সংগঠনটি।
যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ টিটিপিকে একটি বৈশ্বিক জঙ্গি সংগঠন হিসেবে নিবন্ধন করেছে। এটি আফগানিস্তানের ইসলামপন্থী ক্ষমতাসীন তালিবান গোষ্ঠীর একটি সহযোগী সংগঠন। সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ দীর্ঘদিন ধরে সংঘাতপূর্ণ প্রতিবেশী দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছে।
পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, আফগানিস্তান থেকেই সংগঠনটি হামলা পরিচালনা করে থাকে।
কোয়েটায় বুধবারের হামলা এমন সময় হল যখন ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের পোলিও ভ্যাকসিন দেওয়ার একটি দেশব্যাপী অভিযান চলছে। বালুচিস্তান সহ কয়েক ডজন ঝুঁকিপূর্ণ জেলায় সোমবার থেকে এই ৫ দিন ব্যাপী কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ পুলিশের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “অশুভ শক্তিগুলো” কখনোই পাকিস্তানের পোলিও-বিরোধী কর্মসূচীর ক্ষতি করার ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করবে না।”