তেহরানের প্রধান চত্বরে "স্বৈরশাসকের মৃত্যু হোক" স্লোগান দেয়া বিক্ষোভকারীদের দমনে, বুধবার ইরানি দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। দেশটিতে হিজাব দিয়ে ঠিকমতো চুল ঢেকে না রাখার অপরাধে, নৈতিকতা পুলিশ কর্তৃক আটক অবস্থায় এক তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
টুইটারে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, “আমরা যুদ্ধ করব, আমরা মরব, আমরা ইরানকে ফিরিয়ে নেব," বলে তেহরানের একবাতান পাড়ায় বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছে”।
২২ বছর বয়সী কুর্দি নারী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর আমিনী গ্রেপ্তার হন এবং এর তিন দিন পর, হাসপাতালে অচেতন থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। ২০১৯ সালে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভের পর, ইরানে এটিই সবচাইতে বড় বিক্ষোভ।
আমিনীর পরিবার বুধবার পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে যারা তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। তারা কীভাবে তার চিকিত্সা করা হয়েছিল, এবং কীভাবে এবং কেন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
দেশটির বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ বলেছেন, মামলাটি খুব "সতর্কতার সাথে পরিচালনা করা হবে।"
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম বলছে, বিক্ষোভের সময় পুলিশ সদস্য এবং সরকার সমর্থক মিলিশিয়া সদস্যসহ অন্তত ৪১ জন নিহত হয়েছে, যদিও ইরানের মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি বলছে, প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
চাবাহারে, একটি ভিডিওতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে, দাঙ্গা পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে দেখা যায়। বিক্ষোভকারীরা "[সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী] খামেনির মৃত্যু হোক" বলে স্লোগান দিচ্ছিল।
এদিকে, ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, বুধবার দেশটির অভিজাত বিপ্লবী গার্ডরা উত্তর ইরাকের কুর্দি অঞ্চলে জঙ্গি লক্ষ্যবস্তুর উপরে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে।
ইরানের কুর্দি বিরোধী দল কোমালার একজন সিনিয়র সদস্য বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তাদের বেশ কয়েকটি অফিসে হামলা চালানো হয়েছে, এতে সেখানে হতাহত ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইরানি কর্তৃপক্ষ দেশটিতে অস্থিরতার জন্য সশস্ত্র ইরানী কুর্দি ভিন্নমতাবলম্বীদের দায়ী করেছে, বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে, যেখানে ইরানের এক কোটিরও বেশি কুর্দির বেশির ভাগই বাস করে।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য রয়টার্স থেকে নেয়া।