অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

৭০ বছর পর ভারতে ফিরে আসছে বিলুপ্ত চিতাবাঘ


নামিবিয়ার নামিব মরুভূমিতে ঘুরছে একটি চিতা। ৩১ জুলাই, ২০২০
নামিবিয়ার নামিব মরুভূমিতে ঘুরছে একটি চিতা। ৩১ জুলাই, ২০২০

ভারত এবং নামিবিয়া চিতাবাঘ আনার জন্য একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির ফলে ৭০ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এই ‘বড় বিড়াল’ আবারও ফিরে আসছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির বনে।

বুধবার স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে, ভারতের মধ্য প্রদেশ রাজ্যের কুনো ন্যাশনাল পার্ক (কেএনপি) বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে বন্দী অবস্থায় প্রজননের জন্য আটটি আফ্রিকান চিতা বাঘকে আগস্টে নামিবিয়া থেকে ভারতে স্থানান্তর করা হবে।

ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, এই "উচ্চাভিলাষী" প্রকল্পের অংশ হিসাবে, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও ১২টি আফ্রিকান চিতা পার্কে আনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যদিও দুই দেশের মধ্যে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও চুক্তি এখনও স্বাক্ষরিত হয়নি।

ভারতীয় পরিবেশ মন্ত্রকের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "চিতা পুনঃপ্রবর্তন প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হল ভারতে কার্যকর চিতা মেটাপোপুলেশন প্রতিষ্ঠা করা, যা চিতাকে একটি শীর্ষ শিকারী হিসাবে তার কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে দেয়।"

চিতাদের আগমন আগামী ১৫ আগস্ট, ২০২২-এ ভারতের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময়ে একই সাথে ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নামিবিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী নেতুম্বো নন্দি-এনদাইতওয়াহের সাথে নতুন দিল্লিতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরে, ভারতের পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব টুইট করেছেন: "দ্রুততম স্থলজগতের ফ্ল্যাগশিপ এই প্রজাতিকে পুনরুদ্ধার করার সাথে স্বাধীনতার ৭৫ গৌরবময় বছর পূর্ণ করে, চিতা ভারতে প্রাণী ও প্রকৃতির সমন্বিত দৃশ্যকে নতুন করে জাগিয়ে তুলবে।"

চিতা, দ্রুততম স্থল প্রাণী, যারা দ্রুত বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে চলেছে এবং আইইউসিএন-এর প্রতিবেদনে হুমকির সম্মুখীন লাল তালিকাভুক্ত প্রজাতিগুলির একটি হিসাবে চিতাকে গণ্য করা হয়েছে। পৃথিবীতে বর্তমানে আনুমানিক ৭,০০০ বন্য চিতা রয়ে গেছে এবং তাদের প্রায় সবই আফ্রিকা অঞ্চলে।

বিশ্বজুড়ে চিতার সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার জন্য আবাসস্থলের অবক্ষয় এবং শিকারের জন্য বেশিরভাগ দায়ী করা হয়। শিকার, বিচরণ ক্ষেত্রের ক্ষতি এবং খাদ্যের অভাব, ভারতে এই প্রাণীর বিলুপ্তির মূল কারণ।

এটা বিশ্বাস করা হয় যে, ষোড়শ শতকে প্রায় ১০,০০০ এরও বেশি এশিয়াটিক চিতা ভারতের বন্য অঞ্চলে বিচরণ করত।

উনিশ শতকে ভারতে চিতার সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে, মূলত স্থানীয় ভারতীয় রাজা এবং শাসক ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের শিকারের কারণে।

১৯৪৮ সালে মধ্য ভারতে একজন ভারতীয় রাজা শেষ তিনটি এশিয়াটিক চিতাকে শিকার করেন। এর চার বছর পর, ১৯৫২ সালে ভারতে আনুষ্ঠানিকভাবে চিতা বিলুপ্ত হবার ঘোষণা করা হয়।

মাত্র এক ডজন বা তার বেশি এশিয়াটিক চিতা এই মুহূর্তে বন্য অবস্থায় রয়ে গেছে – যার সবগুলোই ইরানে।

ভারতীয় কর্মকর্তারা আশাবাদী যে এবার, ভারতে আফ্রিকান চিতা বাঘের প্রবর্তনের পরিকল্পনা সফল হতে চলেছে এবং দেশটি তার চিতা বাঘের সংখ্যাকে পুনরুজ্জীবিত করতে সক্ষম হবে।

XS
SM
MD
LG