বাংলাদেশ আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা কমে এসেছে। বিশ্বে আরো নতুন নতুন সংকট সৃষ্টি হওয়ায় ভবিষ্যতে এই সহায়তা আরো কমে আসতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। তাই ব্যয় সংকোচন করে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
চট্টগ্রাম সংবাদদাতা মোয়াজ্জেম হোসাইন সাকিলের রিপোর্ট।
বাংলাদেশ সরকার ও উন্নয়ন সংস্থাগুলো সহযোগিতায় যদিও রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে- মানুষের চাহিদার কোন শেষ নেই। তার উপর রোহিঙ্গাদেরও দৈনন্দিন চাহিদার খুব সামান্যই কিছু পূরণ হচ্ছে ক্যাম্পে। তাই কি কি ত্রাণ পেয়েছে- রোহিঙ্গাদের কাছে এমন প্রশ্ন করা হলে, বরং আর কি চাহিদা রয়েছে, এমন তালিকাই আগে শুনান রোহিঙ্গারা।
মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি শুরুতে যেই সহানুভূতি ছিল সময়ের ব্যবধান ও কঠিন বাস্তবায়ত তা ক্রমে কমে আসছে। কমে আসছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তাও।
২৫ আগষ্টের পর থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের জরুরি মানবিক সহায়তা দিতে চাওয়া হয়েছিল ৪৩৪ মিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে সহায়তা মিলেছিল ৩১৭ মিলিয়ন ডলার। আর চলতি বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের সহায়তা দিতে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত 'জয়েন্ট রেসপন্স প্লান'-এর আওতায় ৯৫১ মিলিয়ন ডলার সহায়তা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এবার এর বিপরীতে এখন পর্যন্ত মিলেছে মাত্র ২৮৪ মিলিয়ন ডলার। ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ।
যদি কোন কারণে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাওয়া না যায় তাহলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রম। তাই বিশ্বের সবচেয়ে এই মানবিক সংকটে সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন রোহিঙ্গা সংকটে গঠিত ইন্টারসেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ (আইএসসিজি) এর মুখপাত্র সৈকত বিশ্বাস।
এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আরো নতুন নতুন মানবিক সংকট তৈরি হওয়ায় আন্তর্জাতিক সহায়তা ভাগ হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন রোহিঙ্গা সংকটে গঠিত কক্সবাজারের সিভিল সোসাইটি ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর প্লাটফর্ম কক্সবাজার সিএসও এনজিও ফোমের কো-চেয়ার রেজাউল করিম চৌধুরী। তাই ব্যয় সংকোচনের জন্য রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদান এবং প্রত্যাবাসন কার্যক্রমে সবাইকে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক সহায়তা দানকারীরা।