ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বিকেলে জাতির উদ্দেশে তাঁর ভাষণে বলেন, আজ দেশে লকডাউনের কড়াকড়ি কাটিয়ে আনলক ১ শেষ হচ্ছে আর কাল থেকে আনলক ২ শুরু হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য দেশবাসীদের জীবন ও জীবিকা দুটোই বাঁচানো। তবে সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে আনলক ১ এর সময় বহু লোক স্বাস্থ্যের সুরক্ষা বিধি ঠিকঠাক মেনে চলেননি। এ কথা ঠিক যে করোনা অতিমারীর ক্ষেত্রে ভারত অন্য অনেক দেশের থেকে ভালো অবস্থায় রয়েছে। এখানে করোনার প্রাদুর্ভাব যতই হোক, এত বিশাল সংখ্যক লোকের তুলনায় সেটাকে আয়ত্তে রাখা গিয়েছে। তার কারণ আমরা লকডাউন যথাযথ সময়ে করতে পেরেছি। কিন্তু যদি কেউ আনলক প্রক্রিয়া চলাকালে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিধিনিষেধ ঠিকমতো না মানেন তা হলে আমাদের কর্তব্য হবে তাঁকে সেটা বুঝিয়ে বলা। যাতে শুধু তাঁর জন্যই নয়, ১৩০ কোটি ভারতবাসীর জন্য সেটা কাজ করে। বুঝতে হবে, শুধু একার প্রাণ নয়, আরও অনেকের প্রাণ আমাদের ওপর নির্ভর করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই এখনও বহু দিন চলবে। সামনেই উৎসবের দিন আসছে, তাই এই সময় দেশের কোনও গরিব ভাই-বোন যাতে না খেয়ে থাকেন তার জন্য প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা প্রকল্প অনুযায়ী নভেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা চালু রাখা হবে। তার জন্য ৯০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দেশের কুড়ি কোটি গরিব ভাই-বোন এর ফলে উপকৃত হবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় মাথাপিছু প্রত্যেককে ৫ কিলো করে চাল অথবা গম প্রতি মাসে দেওয়া হবে, আর সেই সঙ্গে প্রতি পরিবারপিছু মাসে এক কিলো করে ছোলা দেওয়া হবে। এ ছাড়া কৃষকদের অ্যাকাউন্টে একত্রিশ হাজার কোটি টাকা জমা পড়েছে জন ধন যোজনার আওতায়। আর গরিব মানুষদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। মোদী বলেছেন, আমরা চেষ্টা করব আর কিছু না হোক ভারতের মানুষ যেন আত্মনির্ভর হতে পারে। আর সেই আত্মনির্ভরতায় ভর করে আমরা করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হবো। ভাষণের আগে প্রধানমন্ত্রী করোনার প্রতিষেধক নিয়ে একটি বৈঠকে আলোচনা করেন। ইতিমধ্যে আনলক ২ এর নিয়ম বিধি প্রচার করা হয়েছে সরকারের তরফে। তাতে বলা হয়েছে ৩১শে জুলাই পর্যন্ত সমস্ত স্কুল কলেজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে, মেট্রো চলবে না, বন্দে ভারত ছাড়া আর কোনও আন্তর্জাতিক উড়ানও চলবে না।