বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিসভার আজকের বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম পরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি গণভবন থেকে বৈঠকে যোগ দেন। সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে অংশ নেন।
কুমিল্লার ঘটনার বিষয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়মিত ব্রিফ করছেন। সেখানে আমাদের ইন্টেলিজেন্সও কাজ করছে। গত রাতে আমরা বসছিলাম। নিশ্চয়ই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আজকে ব্রিফ করার কথা। কুমিল্লার বিষয়ে কাজ হচ্ছে, খুব দ্রুতই সব বের হয়ে আসবে।’
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীনে জেলা-উপজেলা প্রশাসন কাজ করে, এখানে কোনো ঘাটতি আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘ মন্ত্রিসভা বৈঠকে পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কে তাৎক্ষণিক অ্যাকশনে যেতে হবে। যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের অবশ্যই ধরতে হবে। পাশাপাশি জনগণকে একটু ধৈর্য ধরতে হবে, রিঅ্যাকশন করা যাবে না। আমার কুরআনের যদি কেউ অবমাননা করে, কুরআন আমাকে অথরিটি দেয়নি যে ঘরবাড়ি ভাঙবো, সেটা ঠিক না। এটা অপরাধ। ধর্ম নিয়ে অবমাননা করে তাহলে প্রতিবাদ করতে পারি, সরকারের কাছে দাবি করতে পারি শাস্তি প্রদানের। কিন্তু ধ্বংসাত্মক কাজ করবো, এটা সম্পূর্ণ আন-এক্সসেপ্টেবল। ইসলামে এটা সবচেয়ে বড় অপরাধ ফিতনা।’
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয়েছে,তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের । যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, যারা এগুলোর সূত্রপাত করলো তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন হবে। পাশাপাশি ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বলা হয়েছে, ছোটখাট টুইস্টিং কেউ করলেই এভাবে রিঅ্যাকশন করতে হবে, এটা করা যাবে না।’
ফেসবুক বন্ধের বিষয়ে কোন আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘না।’
উল্লেখ্য যে, দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের একটি মন্দিরে পবিত্র কুরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাংচুর চালানো হয়। এরপর চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় সা¤প্রদায়িক হামলার শিকার হয় হিন্দুদের উপাসনালয়, ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রদায়িক হামলার এসব ঘটনায় মোট ৭১টি মামলা দায়ের হয়েছে এবং ৪৫০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
