রবিবার (২৫ জানুয়ারি) মাঝরাতে ঢাকার নীলক্ষেতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শত শত পুলিশ অবস্থান নিয়েছে, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের খবরও পাওয়া গেছে।
সন্ধ্যা থেকেই আন্দোলনরত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করে। রাত ১০টার পরে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণে অবস্থান নেয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ছাত্র সজীব হোসেইন ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল, একটা সময় দুই পক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।"
তিনি যোগ করেন, "আমি ক্যাম্পাস এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় অনুভব করছিলাম কিছু একটা হতে পারে। পরে হট্টগোলের আওয়াজ শুনে বেড়িয়ে আসি হল থেকে, দেখি ঢাবির শত শত শিক্ষার্থী ধাওয়া দিচ্ছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের।"
সাত কলেজের পাঁচ দাবী
সাত কলেজের দাবিগুলোর মধ্যে আছে- ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিল, শ্রেণিকক্ষের ধারণক্ষমতার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি না করা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা, ভর্তি পরীক্ষায় ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কাটা এবং সাত কলেজের ভর্তি ফির স্বচ্ছতা নিশ্চিতে মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত নতুন অ্যাকাউন্টে ভর্তি ফি জমা রাখা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাত কলেজের একটি ঢাকা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুম হাসান ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "আমাদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে হুট করেই ঢাবির প্রক্টোরিয়াল টিম থেকে এমন কিছু কথা বলা হয় যা আমাদের জন্য অপমানজনক ছিল"।
তখন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাবির নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেয় এবং ঢাবি শিক্ষার্থীরাও প্রতিরোধে এগিয়ে আসে।
একটা পর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষ, পুলিশ মাঝে অবস্থান নিয়ে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ঢাবির প্রো-ভিসি অধ্যাপক মামুন আহমেদকে উদ্ধৃত করে স্থানীয় দৈনিক প্রথম আলো জানিয়েছে, "শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা বিষয়ে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সাত কলেজের বিষয়ে যে কমিটি আছে, তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।"
রাত সাড়ে বারোটার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক দেখেছেন ঢাবির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইফ্রিত আলম শীর্ষ।
তিনি ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানিয়েছেন, "কিছুটা দেরি করেই বের হই আমি ততক্ষণে হট্টগোল থেমে গিয়েছে, তেমন কিছু আমি নিজ চোখে দেখিনি"।