অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা শ্রমিকদের কারওয়ানবাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ


মালয়েশিয়া যেতে না পারা শ্রমিকেরা রাজধানী ঢাকার কারওয়ানবাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। ২২ জানুয়ারি, ২০২৫।
মালয়েশিয়া যেতে না পারা শ্রমিকেরা রাজধানী ঢাকার কারওয়ানবাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। ২২ জানুয়ারি, ২০২৫।

২০২৪ সালে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়া যেতে না পারা শ্রমিকেরা রাজধানী ঢাকার কারওয়ানবাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এতে প্রায় ৩ ঘণ্টা সেখানে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) তারা সড়ক অবরোধ করেন।

সমস্যার দ্রুত সমাধানে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে সকাল ৯টায় তারা রাস্তায় নামেন। এতে কারওয়ানবাজারহ আশপাশের এলাকার গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফার্মগেট, বাংলামোটর ও পান্থপথ এলাকা যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে।

পথচারী ও অফিসগামী মানুষ আটকা পড়ে যান। ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আনোয়ার কবির বলেন, "তাদের বুঝিয়ে কারওয়ানবাজার থেকে উঠিয়ে দেওয়ার পর দুপুর ১২টার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। পরে শ্রমিকেরা মিছিল নিয়ে ইস্কাটন গার্ডেনে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দিকে যান। বিকেল ৩টা পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা।"

মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কাছ থেকে কোনো আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তারা। এ ঘটনায় দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করতে সরকারের কাছে দাবি জানান তারা।

তাদের অভিযোগ, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষ করলেও প্রায় ১৮ হাজার কর্মী ফ্লাইট সংকটের কারণে ২০২৪ সালের ৩১ মের মধ্যে মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি। মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ায় এখন তাদের কাজে যোগদানের নিশ্চয়তা মেলেনি।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ৫ অক্টোবর বলেছিলেন, নির্ধারিত তারিখে মালিয়েশিয়া যেতে পারেননি এমন ১৮ হাজার শ্রমিককে নিতে রাজি হয়েছে দেশটি।

প্রবাসী শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে, যেসব কর্মী নির্ধারিত সময়ে যেতে পারেননি, তাদের দ্রুত মালয়েশিয়ায় পাঠানোর দিন-তারিখ নির্ধারণ করতে হবে। যাদের ই-ভিসা হয়েছে কিন্তু জনবল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি এবং যাদের সব প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে, তাদের সবাইকে মালয়েশিয়া পাঠাতে হবে। ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব কর্মীকে পাঠানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

এ ছাড়া, প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণে একটি রেমিট্যান্স ফাউন্ডেশন গঠন করার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

এপ্রিলের মধ্যে ১৮ হাজার শ্রমিক মালয়েশিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা চলছে: সচিব

এদিকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব রুহুল আমিন জানিয়েছেন, ভিসা থাকা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে না পারা ১৮ হাজার কর্মীকে আগামী মার্চ ও এপ্রিলের মধ্যে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, “মালয়েশিয়া সরকার যদি বলে ১৫ দিনের মধ্যে শ্রমিক নেবে, আমরাও ১৫ দিনের মধ্যে পাঠিয়ে দেব। এখন সবকিছু নির্ভর করছে মালয়েশিয়ার ওপর।”

সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব রুহুল আমিন। ২২ জানুয়ারি, ২০২৫।
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব রুহুল আমিন। ২২ জানুয়ারি, ২০২৫।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

'দীর্ঘ প্রক্রিয়া'র প্রশ্নে তিনি বলেন, “যেভাবে আলোচনা চলছে, তাতে আমরা আশা করছি খুব বেশি সময় লাগবে না। ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব ঠিক করতে পারব। আমরা মার্চ-এপ্রিলে কর্মী পাঠানো শুরু করতে পারি।”

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করেছে এবং দুটি বৈঠক হয়েছে, এতে কিছুটা অগ্রগতিও হয়েছে।

প্রক্রিয়াটির পদ্ধতি সম্পর্কে এক প্রশ্নে রুহুল আমিন বলেন, “আমরা আশা করছি ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে আরেকটি বৈঠক হবে। আমাদের যা যা তথ্য দেওয়া দরকার— তা দেওয়া হয়েছে। তারাও তাদের তথ্য আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছে। তারা যেভাবে আমাদের কাছে এসেছেন, নীতিগতভাবে অনেক কিছুই মেনে নিয়েছেন। তবে সবকিছু এখনো চূড়ান্ত হয়নি।”

রুহুল আমিন আরও বলেন, “আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, মন্ত্রণালয় পর্যায়ের আলোচনার পর তারা অনুমোদন দেবেন। এরপর শুরু হবে চূড়ান্ত প্রক্রিয়া। তবে তারা আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। ধাপে ধাপে এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।”

XS
SM
MD
LG