আন্তর্জাতিক সঙ্কট অমীমাংসিত রয়ে যাওয়া সত্ত্বেও, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পররাষ্ট্র নীতিতে তাঁর সাফল্য তুলে ধরার লক্ষে সোমবার বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ চার বছর আগে তিনি ক্ষমতা নেয়ার আগের চেয়ে দুর্বল।
প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের এক সপ্তাহ আগে বাইডেন স্টেট ডিপার্টমেন্টে দেয়া এক বিরল ভাষণে, ২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ইউক্রেনকে এবং মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরায়েলকে দেয়া তার প্রশাসনের সমর্থন ফলাও করে তুলে ধরেন।
বাইডেন বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র “বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় জয়ী” হচ্ছে এবং অর্থনৈতিকভাবে চীন তাদের টপকাতে পারবে না, যা পূর্বাভাস করা হয়েছিল। অন্যদিকে, রাশিয়া এবং ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশগ্রহণ ছাড়াই যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
“চার বছর আগের তুলনায়, আমেরিকা আরও শক্তিশালী, আমাদের জোটগুলো আরও শক্তিশালী, আমাদের প্রতিপক্ষ ও প্রতিযোগীরা আরও দুর্বল,” বাইডেন বলেন। “এসব করতে আমরা কোন যুদ্ধ করিনি।”
ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে যদিও যুদ্ধ চলছে, কর্মকর্তারা আশা করছেন ২০ জানুয়ারি বাইডেন হোয়াইট হাউস ত্যাগ করার আগেই ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে একটি চুক্তির আয়োজন করা যাবে।
বাইডেন বলেন, হামাসের হাত থেকে জিম্মিদের মুক্তি এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে লড়াই বন্ধ করে মানবিক সাহায্য নিশ্চিত করার লক্ষে আলোচকরা একটি সমঝোতার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
“এত নিরপরাধ মানুষ নিহত হয়েছে, এত সম্প্রদায় ধ্বংস হয়ে গেছে, শান্তি ফিলিস্তিনি জনগণের প্রাপ্য,” তিনি বলেন।
স্টেট ডিপার্টমেন্টে বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলার সময় অস্ত্র সরবরাহ এবং কূটনৈতিক সমর্থন দেয়ার জন্য বাইডেন সমালোচনার মুখে পড়েছেন। হামাস ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে চালিয়ে, ইসরায়েলের হিসেব অনুযায়ী, ১,২০০জনকে হত্যা এবং ২৫০জনকে জিম্মি করে।
এর পর থেকে, গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে, ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হিসেব অনুযায়ী, অন্তত ৪৬,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে, ভূখণ্ডের বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস এবং ২৩ লক্ষ বাসিন্দাদের বেশিরভাগ বাস্তচ্যুত হয়েছে।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের বাইরে সোমবার বিক্ষোভকারীরা বাইডেনকে লক্ষ্য করে “যুদ্ধাপরাধী” বলে চিৎকার করে। কেউ কেউ প্ল্যাকার্ড তুলে ধরে, আবার কেউ কেউ লাল রং ছুঁড়ে দেয়, যার উদ্দেশ্য ছিল রক্ত বোঝানো।
বাইডেন বলেন তিনি গাজায় হামাস এবং লেবাননে হিজবুল্লাহকে পরাজিত করার জন্য ইসরায়েলকে সাহায্য করেছেন, যে দুই গোষ্ঠী ইরান-সমর্থিত। গত বছর ইসরায়েলের উপর দুই দফা ইরানি আক্রমণের সময় ওয়াশিংটনের সাহায্যর প্রশংসা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
“ শেষ কথা হল, ইরান গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল অবস্থানে আছে,” তিনি যোগ করেন, সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের দিকে ইঙ্গিত করে। “কোন সন্দেহ নেই যে আমাদের পদক্ষেপ এখানে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।”