আগামীতে চরম-শত্রু ইসরায়েল ও নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের আরও অবনতির আশঙ্কার মধ্যে, শনিবার ইরানের বিমান বাহিনী আকাশ হামলা প্রতিরক্ষার মহড়া চালিয়েছে, জানায় দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
এই মহড়া অনুষ্ঠিত হলো এমন সময়ে যখন ইরান কয়েকটি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ক্ষমতা গ্রহণের পর ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলোতে হামলা চালাতে উৎসাহ দিতে পারেন এবং একইসঙ্গে “সর্বোচ্চ চাপ” নীতির আওতায় তেল শিল্পের ওপর আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়, “এসব মহড়ায়… প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রকৃত যুদ্ধক্ষেত্রের মতো পরিস্থিতিতে আকাশ পথে আসা হামলা, ক্ষেপণাস্ত্র ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধ-কৌশল প্রতিহত করার তালিম নেবে…যাতে দেশের আকাশসীমা, সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোকে সুরক্ষিত রাখা যায়।”
গত ৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া দুই মাসব্যাপী সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে শনিবার এসব কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ইতোমধ্যে দেশটির সুপ্রশিক্ষিত রেভোলুশনারি গার্ডস (আইআরজিসি) ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার বিরুদ্ধে নাতাঞ্জ এলাকার গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাকে সুরক্ষিত রাখার মহড়া সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
ভূগর্ভস্থ 'ক্ষেপণাস্ত্র শহর'
ইরানের সামরিক বাহিনী বলছে, তারা এই মহড়ায় নতুন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। তারা একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে, যেখানে গার্ডস কমান্ডার-ইন-চিফ মেজর জেনারেল হোসেইন সালামিকে একটি নতুন, ভূগর্ভস্থ “ক্ষেপণাস্ত্র শহর” পরিদর্শন করতে দেখা গেছে।
সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে ইরান সমর্থিত সশস্ত্র বাহিনী হিজবুল্লাহ ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে। সঙ্গে তেহরানের মিত্র বাশার আল-আসাদকেও সিরিয়ার শাসকের পদ থেকে উৎখাত করা হয়েছে।
তবে রাষ্ট্রীয় টিভিতে প্রচারিত এক বক্তব্যে সালামি সতর্ক করেন, ইরানের শত্রুদের মধ্যে “আনন্দের অনুভূতি দেখা দিলেও তা মিথ্যা”। তিনি বলেন, ইরান এবং সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি সম্পন্ন করেন, যার আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের আরোপ করা অর্থনৈতিক বিধিনিষেধ শিথিলের বিনিময়ে ইরান ইউরেনিয়াম পরিশোধন কার্যক্রম সীমিত করতে সম্মত হয়। এই প্রক্রিয়ায় পরমাণু অস্ত্র তৈরির উপকরণ তৈরি করা সম্ভব। তবে ২০১৮ সালে ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে সরে আসেন।