সিলেটে অনির্দিষ্টকালের ‘পরিবহন ধর্মঘটের’ ডাক দিয়েছে সিলেটের বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) থেকে এই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সংগঠনটি।
সিলেটের জকিগঞ্জে গত রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) একাধিক বাসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে সংগঠনের নেতারা এ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন।
বাসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল করেনি।
এছাড়া রবিবার রাতে জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের উদ্দেশ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বাসের চালক বাদী হয়ে অজ্ঞাত অর্ধশত অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন।
জানা যায়, রবিবার সকালে জকিগঞ্জের কামালগঞ্জ আব্দুল মতিন কমিউনিটি সেন্টারের পাশে এক জায়গায় (সড়কের পাশে) শিশু-কিশোররা ফুটবল খেলছিল। হঠাৎ বল সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে চলে গেলে সেটি আনতে আবির আহমদ নামের এক কিশোর দৌঁড় দেয়। এসময় একটি চলন্ত বাসের নিচে পড়ে সে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর স্থানীয়রা সেই বাস আটকে পার্শ্ববর্তী একটি স্কুলের মাঠে নিয়ে এতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ- এটি ছাড়াও আরও অন্তত ৩টি বাস ভাঙচুর করা হয়। এর প্রতিবাদে সোমবার পরিবহন শ্রমিকরা সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুহিত বলেন, "আমাদের বাসের চালক অন্যায় করলে আইন অনুযায়ী শাস্তি হবে। কিন্তু আইন হাতে তুলে বাস ভাঙচুর করা ও পুড়ানো সন্ত্রাসী কাজ। আমরা এর বিচার চাই।"
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসের চালক বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের আবেদন করেছেন।
তিনি বলেন, "আমাদের অন্তত ৪টি বাসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে ও নিরাপত্তার অভাবে আমাদের চালকরা সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। আজ রাতের মধ্যে প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে আগামীকাল (মঙ্গলবার) সকাল থেকে পুরো সিলেট জেলায় কর্মবিরতি পালন করবেন বাস চালক ও শ্রমিকরা। আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করবে বাকি পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলোও।"
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, "সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস-মিনিবাস চলাচল করছে না বলে জানতে পেরেছি।"
বাস ভাঙচুরের দাবি করে রবিবার রাতে হেলাল মিয়া নামের একজন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
উপজেলাজুড়ে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ।
এদিকে, সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে সোমবার সকাল থেকে বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাস বন্ধ থাকায় দিনভর চরম দুর্ভোগ পড়েন যাত্রীরা। বিশেষ করে অফিসগামীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তারা অতিরিক্ত ভাড়া গুনে বিকল্প যানবাহনে অফিসে যান এবং অফিস থেকে বাড়ি ফেরেন।
পথচারীদের অভিযোগ-বাস শ্রমিকরা বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে রাখায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাও চলাচল করতে পারেনি। ফলে বেশি দুর্ভোগে পড়েন জরুরি প্রয়োজনে সড়কে চলাচলকারী লোকজন।