ঢাকার কারওয়ান বাজার থেকে শনিবার রাতে সাংবাদিক মুন্নী সাহাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। তবে তার কয়েক ঘণ্টা পর দিবাগত রাতে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মধ্যরাতের পরে মুচলেকা দিয়ে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক জানান, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৭ ধারায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
অর্থাৎ তাকে জামিন চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে পুলিশের সমন পেলেই আদালতে হাজির হতে হবে।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে মুন্নি সাহাকে তুলে নিয়ে যায় ডিবির একটি দল।
তিনি বলেন, মুন্নি সাহার বিরুদ্ধে ঢাকায় একাধিক মামলা রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
মুন্নী সাহা 'এক টাকার খবর' নামের একটি অনলাইন পোর্টালের সম্পাদক ছিলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পরে একাধিক মামলায় আসামীর তালিকায় মুন্নী সাহার নাম এসেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিককে জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনের সময়কার ঘটনায় হত্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের নামে এভাবে হত্যা মামলা দেওয়ার প্রবণতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করছে বলে বিবৃতি দিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।
নভেম্বরের ২০ তারিখ 'দ্য ডেইলি স্টার'কে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সেখানে জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ঘটনায় করা হত্যা মামলা নিয়ে কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে ভিত্তিহীন হত্যা মামলা দায়ের নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস জুলাই-অগাস্ট হত্যা মামলায় ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের নাম আসার বিষয়টি ‘পুরোনো আইন ও চর্চা’র ফল বলে মন্তব্য করেন।
তড়িঘড়ি করে মামলা করতে গিয়ে এমনটি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এ ধরনের মামলা করা বন্ধে তার অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে ওই সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস আশ্বস্ত করেন। পাশাপাশি যে মামলাগুলো হয়েছে, সেগুলোর ভিত্তি আছে কি না, তা একটি কমিটি পরীক্ষা করে দেখবে বলে জানান তিনি।
২১ নভেম্বর তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আরএসএফ, হত্যা মামলায় সাংবাদিকদের জড়ানোর বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে। সেই সঙ্গে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে কাঠামোগত সংস্কারের পথে এগিয়ে যেতে তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।