ঢাকায় পুলিশ বলছে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে 'সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টা' করার অভিযোগে তারা রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ও প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্পের ছবি নিয়ে নেতা-কর্মীদের মিছিল করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানায় স্থানীয় গণমাধ্যম। একটি ফাঁস হওয়া কথিত ফোনালাপের বরাত দিয়ে এখবর প্রচার করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের এই গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হয়।
"শনিবার রাতে গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী অভিযান চালানো হয় এবং ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে," ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিবৃতিতে জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে সতর্ক রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভারতে অবস্থান করছেন।
আওয়ামী লীগের 'চক্রান্ত'
সরকারি সূত্র জানায়, "ফোনে শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা দেওয়া ষড়যন্ত্রের অংশ। মূলত দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট এবং ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"
এর আগে ৬ই নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও অভিযোগ করছে যে আওয়ামী লীগ আবার মঞ্চে ফেরার চেষ্টা করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ডনাল্ড ট্রাম্পের ছবি ব্যবহারসহ নানা 'গোপন উপায়ে' ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ দেশের রাজনৈতিক মঞ্চে ফেরার চেষ্টা করছে।
রবিবার (১০ই নভেম্বর) ঢাকায় পৃথক দুটি অনুষ্ঠানে তারা আরও অভিযোগ করেন, 'আওয়ামী লীগ তার রাজনৈতিক অবস্থান হারিয়েছে বলেই এ ধরনের চক্রান্তে মেতেছে।'
ট্রাম্পের টুইট
এর আগে ডনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন।
সামাজিক মাধ্যম এক্স ও ট্রুথ সোশ্যাল-এ অক্টোবর ৩১-এ এক পোস্টে তিনি লেখেন, "আমি হিন্দু, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বর্বর সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাই যারা বাংলাদেশে মব দ্বারা আক্রমণ ও লুটপাটের শিকার হচ্ছে, দেশটি সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে।"
তিনি পোস্টে হিন্দুদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসনের সমালোচনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ২৬ সেপ্টেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের এক বিরতিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
ঐ সাক্ষাৎ শেষে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট-এর মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানান, দুই নেতা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, দুর্নীতি রোধ, শ্রম অধিকারের প্রতি সম্মান এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যসহ বাংলাদেশের সকলের জন্য মানবাধিকার সুরক্ষার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।